সিটি কর্পোরেশন দায় এড়াতে পারে না
নাগরিকদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সমন্বিত কার্যক্রমে মশানিধন কর্মসূচি বেশি সফলতা আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের সামনে ডিএসসিসি কর্তৃক মশক নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধনকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ৫টি জোনে ভাগ করে সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচি পরিচালিত হবে। প্রথমদিনে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, এবার আগাম বৃষ্টি হওয়ায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। আমরা একাধিকবার ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নেয়ার কারণে এই ঝুঁকি থেকে বের হয়ে এসেছি। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। এখন তাপমাত্রা কমে আসার কারণে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বাড়ছে। সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ জনবল দিয়ে সফল হতে চেষ্টা করব, নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই সবকিছু।
জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, মশা নিধনে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যদি কোনো এলাকায় (কর্মচারীরা) অনুপস্থিত থাকে তাহলে সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে অবহিত করলে অনুমতি সাপেক্ষে বাসায় গিয়ে স্প্রে করতে বাধ্য থাকবে। মেয়রের এই উদ্যোগ যেন সফল হয় সেটিই কাম্য। নগরবাসী মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ। সিটি কর্পোরেশন কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না।
বিশেষ করে রাজধানীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ডেঙ্গু প্রাণঘাতী হয়ে উঠায় এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে ব্যাপক জনসচেতনতারও কোনো বিকল্প নেই।
এ সংক্রান্ত সংবাদ থেকে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু সংখ্যা। অক্টোবর মাসে মোট ২ হাজার ৩৭৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। অর্থাৎ গত মাসে গড়ে প্রতিদিন ৭৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
সর্বশেষ গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমানের মৃত্যু হয়। সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮৭ জন। মৃত্যুবরণ করেন চারজন।
ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ। এই রোগের জীবাণু বহনকারী হচ্ছে এডিস মশা। এই মশা সাধারণত দিনের বেলাতেই কামড়ায়। সাধারণ মশার চেয়ে এই মশা আকাড়ে বড় এবং দেখতে ডোরা কাটা রঙের। এই মশার প্রবণতা হচ্ছে এরা পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে। তাই কোথাও পানি জমে থাকতে দেয়া উচিত নয়। বিশেষ করে পরিষ্কার পানি। মশাবাহিত রোগ হওয়ায় মশার বংশবৃদ্ধি রোধ, নিধন ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞের মতে, ঘরের কোণে বারান্দায় যাতে সাতদিনের বেশি কোনো পানি জমে থাকতে না পারে; সেদিকে বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন। ঘরবাড়ি ও এর চারপাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারকেলের মালা বা পানি ধারণ করতে পারে এ জাতীয় পাত্র ধ্বংস করে ফেলতে হবে, যাতে কোনোভাবেই পানি জমতে না পারে।
এইচআর/এমকেএইচ