ট্রাফিক সপ্তাহ ও সড়ক নিরাপত্তা
ঢাকাসহ সারাদেশে গতকাল রোববার থেকে শুরু হয়েছে ট্রাফিক সপ্তাহ। আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত যানবাহনের নিবন্ধন, লাইসেন্স, ফিটনেস, ইনস্যুরেন্সসহ নানা কাগজপত্র ও এসবের মেয়াদ যাচাই-বাছাইয়ের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে পুলিশ। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর গুলিস্থান জিরো পয়েন্টে ট্রাফিক সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এ সময় তিনি বলেন, এই ট্রাফিক সপ্তাহের মাধ্যমে আমি সবাইকে রাস্তায় চলাচলে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানচ্ছি। তিনি বলেন, রাস্তায় চালক, যাত্রী, পথচারী সবাইকেই আইন মেনে না চলতে হবে। তা না হলে সড়ক দুর্ঘটনা কোনোভাবেই কমানো যাবে না। সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে চললে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে। সড়কে ফিরবে শৃঙ্খলা। এ জন্য ট্রাফিক আইন মেনে চলার সবার জন্যই কর্তব্য।
ট্রাফিক সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন- প্রধানত চারটি কারণে সড়ক- মহাসড়কে যানজট ও ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে- প্রথমত, চালকদের ট্রাফিক সংক্রান্ত জ্ঞানের অভাব। দ্বিতীয়ত, যথাযথ পরিবেশের অভাব। তৃতীয়ত, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অভাব এবং চতুর্থত, এনফোর্সমেন্টের অভাব।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমরা স্কাউট ও পুলিশ সদস্যদের ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও যানবাহনের কাগজপত্র যাচাইকালে পথচারী ও চালকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার জন্য বলে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহন লিমিটেডের একটি বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীরা গাড়ির কাগজপত্র যাচাই ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাফিক সপ্তাহের ঘোষণা দেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
পুলিশ সদস্যরা যানবাহনের বৈধতা, মেয়াদ, ফিটনেস, চালকের লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করবেন। এই কার্যক্রমে আগের মতো স্কাউট এবং গার্লস গাইডরা সহযোগিতা করবেন। শিক্ষার্থীরা চাইলে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে পারে। ট্রাফিক পুলিশ সপ্তাহে প্রভাবশালীদের আইন না মানার অপচেষ্টা বন্ধ ও সাধারণ জনগণকে রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
ট্রাফিক আইন জানা ও মেনে চলা প্রতিটি নাগরিকেরই কর্তব্য। অনেক সময় সচেতনতার অভাবেও ট্রাফিক আইন মানার ব্যাপারে ব্যত্যয় ঘটে। এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাতে হবে। লোকজনকে সচেতন করতে হবে। এছাড়া রাস্তা পারাপারের ব্যাপারেও সাবধান থাকতে হবে। সব ধরনের পরিবহনকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। রাস্তায় অনেক জায়গায় জেব্রা ক্রসিংয়ের দাগ ওঠে গেছে। সেখানে প্রতিটা জেব্রা ক্রসিং যাতে চিনতে পারা যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক আইন মানার ব্যাপারে সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় সড়কে শৃঙ্খলা ফিরুক এবং সড়ক হোক নিরাপদ-এটিই প্রত্যাশা।
এইচআর/জেআইএম