অচলাবস্থার অবসান হোক
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় টানা সপ্তম দিনেরমতো আন্দোলনে ছিল শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবারও রাজধানীর রাস্তাঘাট ছিল তাদের দখলে। গাড়ির লাইসেন্স চেক করাসহ ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে তাদের। চলমান এ আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী। রাস্তায় গাড়ি চলছে না। লোকজনকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গন্তব্যে যেতে। এ অবস্থায় সকল পক্ষেরই একটি যৌক্তিক সমাধান প্রত্যাশা।
এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘নিরাপত্তাহীনতার’ অজুহাতে গত বৃহস্পতিবার থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। এতে রাজধানী ছাড়াও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু করলেও শনিবার সকালেই ফের তা বন্ধ রাখা হয়।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলো থেকে আন্তনগর কিংবা দূরপাল্লার অধিকাংশ বাস ছেড়ে যায়নি। তবে বেশ কিছু বাস সকালে ঢাকায় প্রবেশ করেছে। ভাঙচুরের আশঙ্কায় পরিবহন নামানো হয়নি বলে দাবি পরিবহন মালিকদের। ফলে অনেকটা বিপাকে পড়েন দূরপাল্লা ও রাজধানীর সাধারণ যাত্রীরা।
শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি জানিয়েছে তার মধ্যে আছে, বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তির বিধান রেখে আইন করতে হবে, নৌমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস বাস স্টপেজে ফুট ওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রতিটি সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে তাদের বাসে তুলতে হবে, শুধু ঢাকা নয়—সারা দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল ও লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
শিক্ষার্থীদের দাবি বেশির ভাগই মেনে নিয়েছে সরকার। দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক ও মালিককে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। নিহতের দুই পরিবারকে ২০ লাখ করে টাকা দেয়া হয়েছে। এরপরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ বলছে দীর্ঘদিন আন্দোলন চললে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে নানা পক্ষ এ থেকে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করবে। শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ অবস্থায় জনদুর্ভোগ লাঘবে অতিদ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। আমরা চাই নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের পাশাপাশি সব ধরনের অচলাবস্থার অবসান হোক।
এইচআর/এমএস