কেন এই অশুভ তৎপরতা?
দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার কথা বার বার উচ্চারিত হলেও বাজারে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। যে কোনো উসিলায়ই হঠাৎ করেই পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সামনে রমজান মাস। রমজানে ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, খেজুর ও ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। এ কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায় হঠাৎ করেই। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে দাম বাড়ানোর প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে টিসিবিকে সক্রিয় করাসহ নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
রমজানকে সামনে রেখে যেন অসাধু ব্যবসায়ীরা ফায়দু লুটতে না পারে সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আশার কথা হচ্ছে এবার অসাধু ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিতে চান না সরকারের সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে আগেভাগেই মাঠে নামছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। মিল-কারখানা, পাইকারি ও খুচরা বাজার বিশেষ করে যারা পণ্যের অবৈধ মজুদ রেখে মূল্য বাড়িয়ে দেবে তাদের বিরুদ্ধে চলবে বিশষে অভিযান, নেয়া হবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা।
রমজান মাস এলেই পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে এবার আগে থেকেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান শুরু করবে অধিদফতর। যেন রমজানে পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরা যেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সতর্ক থাকেন। দেশের বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে রাজধানীর পাইকারি বাজারে অভিযান শুরু হবে। যারা ভোক্তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন করে বাড়তি মুনাফা আয়ের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মূল্যবৃদ্ধির অশুভ প্রবণতা বন্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নাগালের মধ্যে রাখা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। মানুষজন এমনিতেই নানা সংকটে আছে। তারওপর হঠাৎ হঠাৎ দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে সেটা ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হিসেবেই দেখা দেয়। পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ যদি ঠিক রাখা যায় তাহলে মুনাফালোভী সিন্ডিকেট খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। এ জন্য টিসিবিকে কার্যকর করে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার কথা বার বার বলা হলেও কাজের কাজ খুব একটা হয়নি। এ জন্য সিন্ডিকেট চক্রের পোয়াবারো। তারা যে কোনো উসিলায় যে কোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
একমাস পরই শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। সিন্ডিকেট ধারীরা ওঁৎ পেতে থাকে এধরনের সুযোগ নেওয়ার জন্য। তারা যাতে সেই সুযোগ নিতে না পারে এ জন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। তাছাড়া বাজারে টিসিবির মাধ্যমে পণ্যের সরবরাহও ঠিক রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের মুনাফালোভী মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে শুধু মুনাফার লোভ কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। এক্ষেত্রে সরকার, ব্যবসায়ীমহলসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। জোরদার করতে হবে বাজার মনিটরিং।
এইচআর/জেআইএম