বাড়িতেও অনিরাপদ শিশুরা!
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ‘ইউনিসেফে’র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ৮ হাজার ৫০০ শিশুর মৃত্যু হয় বলে যে তথ্য ওঠে এসেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। মৃত্যু রোধ ও শিশুর সার্বিক নিরাপত্তায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিবেদনে বলা হয় বিশ্বে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন শিশু অর্থাৎ প্রতি সাতজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু বাড়ির আঙিনায় দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করছে। ‘ক্লিয়ার দ্য এয়ার অব চিলড্রেন’-এই কার্যক্রমে ব্যবহৃত উপগ্রহ চিত্রে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে যে বাড়ির আঙিনায় বহু শিশু বায়ু দূষণের শিকার হচ্ছে। মরক্কোর মারাকেশে কপ-২২-এর সম্মেলন শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরই ইউনিসেফ এই চিত্র প্রকাশ করলো।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরাই এ ধরনের দূষিত বায়ুর মধ্যে বেশি বসবাস করছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ৬২০ মিলিয়ন শিশু, আফ্রিকায় ৫২০ মিলিয়ন শিশু, পূর্ব এশিয়ায় ৪৫০ মিলিয়ন শিশু বাড়ির আঙিনায় বায়ু দূষণের শিকার হয়। এছাড়া প্রতিবেদনে ঘরের ভেতরের বায়ু দূষণের চিত্রও তুলে ধরা হয়। জ্বালানি, কয়লা, কাঠ, পশুর বিষ্ঠা দিয়ে রান্নার ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া ও তাপে ঘরে বায়ুদূষণ হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের কম আয়ের পরিবারের শিশুরাই এর বেশি শিকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণ শুধু শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষতি করে না। এটি শিশুদের মস্তিষ্ককে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। প্রণিধানযোগ্য বিষয় হচ্ছে, শুধু কলকারখানা ও যানবাহনের কালো ধোঁয়াই নয় বাড়ির আঙিনায়, বা ঘরে যে চুলায় রান্না হচ্ছে সেই চুলার ধোঁয়াও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ধরিদ্র ও অসহায় পরিবারের শিশুরাই এতে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
সচেতনতার অভাবেও শিশুরা দূষিত ধোঁয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য উন্নত মানের চুলা ব্যবহার করতে হবে যাতে ক্ষতিকর ধোঁয়া বের হতে না পারে। কিন্তু দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের পক্ষে সেটি কতোটা সম্ভব এটি নিয়ে ভাবতে হবে। শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশ। তাদের সুরক্ষা দিতে হবে যে কোনো মূল্যে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশাবাদী।
এইচআর/জেআইএম