ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চাকরির প্রলোভনে প্রতারণা, চাইনিজ নাগরিকসহ গ্রেফতার তিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:২১ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অনলাইনে চাকরির প্রলোভনে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চাইনিজ নাগরিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির উত্তরখান থানা পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন- মো. মোর্শেদ আলম (৩৮), জামাল উদ্দিন (৪৩) ও চাইনিজ নাগরিক মি. কুকি (৩৫)।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে উত্তরখান ও গুলশান থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে উত্তরখান থানা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা নগদ ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, চার হাজার ডলার ও বেশ কিছু অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা, চারটি মোবাইল ফোনসেট ও কয়েকটি চেক বইয়ের পাতা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, জনৈক নাহিদুল ইসলামকে (২৮) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে প্রলোভন দেখিয়ে পলারস্টেপ সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে চাকরির জন্য প্রস্তাব দেয় গ্রেফতার প্রতারকরা। ভুক্তভোগী নাহিদুল ইসলাম সরল বিশ্বাসে তাদের প্রস্তাবে রাজী হয়ে পলারস্টেপ সফটওয়্যারে অনলাইনে কাজ শুরু করেন। কাজের শুরুতে তারা নাহিদুল ইসলামকে ৮২০ টাকা কমিশন দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন অফারের প্রলোভন দেখিয়ে তারা নাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের আনাস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি চলতি অ্যাকাউন্টে কয়েক দফায় চার লাখ ৪৩ হাজার ৩৭৭ টাকা গ্রহণ করে।

এরপরও বাদীকে আর কোনো কমিশন না দিয়ে পুনরায় তিন লাখ ১৯ হাজার ১৩০ টাকা চাইলে ভুক্তভোগী সন্দেহ হয়। তখন ভুক্তভোগী ডাচ বাংলা ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন অ্যাকাউন্টটি উত্তরখানের বাবুর্চি বাড়ির আনাস এন্টারপ্রাইজের নামে। তখন ভুক্তভোগী নাহিদুল ইসলাম বিষয়টি উত্তরখান থানায় অবহিত করেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আইনগত সহায়তার জন্য উত্তরখান থানার একটি টিম ২৩ ডিসেম্বর রাতে আনাস এন্টারপ্রাইজের দোকানের মালিক মো. মোর্শেদ আলমকে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং পুলিশকে জানায় জামাল উদ্দিন নামের একজনের সহযোগিতায় তার নিজ নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২২ ডিসেম্বর প্রায় ৩২ লাখ টাকা যোগ হয়েছে। যার মধ্যে ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা মোর্শেদের নিজের এবং অবশিষ্ট টাকা জামাল উদ্দিনের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে।

থানা পুলিশ তখন মো. মোর্শেদ আলমকে হেফাজতে নেয় এবং তার কাছ থেকে নয় লাখ ৪৩ হাজার টাকা, দুটি মোবাইলফোন এবং কিছু চেকের পাতা জব্দ করে।

ডিসি তালেবুর রহমান আরও জানান, মোর্শেদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই বাবুর্চি বাড়ির গফুর মুন্সী রোডের একটি বাসা থেকে জামালকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। থানা পুলিশ তার কাছ থেকে ৪ হাজার ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা, দুটি মোবাইলফোন এবং ব্যাংকের চেক বইয়ের কিছু পাতা জব্দ করে।

পরবর্তীতে জামালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নাসিম ২৩ ডিসেম্বর গুলশান থানা পুলিশের সহায়তায় গুলশান-১ থেকে চাইনিজ নাগরিক মি. কুকিকে গ্রেফতার করে।

ডিসি তালেবুর রহমান জানান, গ্রেফতার চাইনিজ নাগরিক মি. কুকির সঙ্গে জামালের এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে চায়নাতে গিয়ে জামালের পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে মি. কুকি জানায়, কিছুদিন পরে সে বাংলাদেশে আসবে এবং তাকে একটি লাভজনক ব্যবসা প্রদান করবে। ১৫-২০ দিন আগে উত্তরা রেস্টুরেন্টে মি. কুকির সঙ্গে জামালের সাক্ষাৎ হয়। সেখানে মি. কুকি জামালকে কয়েকটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে বলে; যে নম্বরে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আসবে। সে কুকির দেওয়া নম্বরে ওই টাকা ট্রান্সফার করবে। কুকি জানায় এর বিনিময়ে জামাল কমিশন পাবে। জামাল মি. কুকির প্রস্তাবে রাজী হয়ে মোর্শেদ আলমের আনাস এন্টারপ্রাইজের বিজনেস অ্যাকাউন্ট নম্বর মি. কুকিকে প্রদান করে।

গ্রেফতার মি. কুকি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে নিজে জড়িত থেকে তার সহযোগীদের সহায়তায় বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে স্বীকার করেছে।

টিটি/এমআইএইচএস/এমএস