ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

গণঅভ্যুত্থানের মর্যাদা রক্ষায় নির্বাচিত সরকার জরুরি: দুদু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূসের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দিক হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার। সেই নির্বাচিত সরকার যতক্ষণ না আসবে গণঅভ্যুত্থান তার মর্যাদা হারাবে। নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়েই সেই মর্যাদা ধরে রাখতে হবে ও সংকট কাটাতে হবে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতের আগ্রাসনে হাসিনার দেশজুড়ে অরাজকতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ সমবায় দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজামান দুদু বলেন, ড. মো. ইউনূস সাহেব একটু হুঁশে আসুন। এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দিক হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার। এর কোন ভিন্ন পথ আছে এটা আমি মনে করি না। সেজন্য আমরা নির্বাচনের আহ্বান করেছি। আমি মনে করি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের দিকে দেশকে এগিয়ে নেয়া উচিত।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ভারত একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের যে সহযোগিতা করেছিল, আমাদের দেশের মানুষকে তাদের ভূখণ্ডে জায়গা দিয়েছিল, তার জন্য আমরা তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি। কিন্তু এই ভারত বিগত ৫৩ বছরে আমাদের বন্ধুত্ব, আমাদের কৃতজ্ঞতাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার পরে নব্য বাংলাদেশে লুটপাট করেছিল তাদের সেনাবাহিনী এবং তাদের জনগণ। বাংলাদেশ ব্যংক থেকে নির্বিচারে শেখ হাসিনা যেমন লুটপাট করেছে, ঠিক তেমনই সেই সময় ভারতও বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে। তখন আমাদের টাকার দরকার ছিল। কারণ সদ্য স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষের জন্য খাবারের প্রয়োজনে, বেঁচে থাকার প্রয়োজনে টাকার দরকার ছিল। কিন্তু সেই সময় ভারত সেই টাকা নিয়ে গেছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের কাছ থেকে যে অস্ত্র পেয়েছিল সেই অস্ত্রগুলো তারা ট্রাকে ভরে ভারতে নিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় রাশিয়ান কয়েকটি এসএলআর ছাড়া বাংলাদেশে আর কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি। অথচ হাজারর হাজার কোটি টাকার অস্ত্র সেই সময় আমাদের বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল। অর্থাৎ একটা সেনাবাহিনী তৈরি করার মতন অস্ত্র সেই সময় বাংলাদেশে ছিল।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতির মতে, স্বাধীনতার পরপরই পার্শ্ববর্তী বন্ধু নামধারী দেশটি সদ্য স্বাধীন এই বাংলাদেশের সাথে যে ব্যবহার করেছে, সেই একই ব্যবহার আমরা এই ডিসেম্বরেও লক্ষ্য করছি। এমনকি ভারত ভয়ংকর গণহত্যাকারী ও লুটেরা শেখ হাসিনা এবং তার দলকে আশ্রয় দিয়েছে। এই আশ্রয়ের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে তারা গণহত্যাকারী এবং লুটেরার পক্ষের একটা শক্তি। অর্থাৎ ভারত সবসময়ই আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনার বাইরে কখনও আর অন্য কোনো চিন্তা করতে পারে না। আর এর বাইরে কোন চিন্তা করতে পারেনি বলেই তারা বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু হতে পারেনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বন্ধু হতে পারেনি।

আরও পড়ুন

এসময় ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার করা সব গোপন চুক্তি সংসদে উত্থাপনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান দুদু। এর পাশাপাশি তদন্ত কমিশন করে হাসিনা সরকারের দুর্নীতির চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান বিএনপির এই নেতা।

বাংলাদেশ দখল করা নিয়ে বিভিন্ন সময় ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও দেশটির গণমাধ্যমের মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তান যেখানে ব্রিটিশদের সঙ্গে দেন-দরবার করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে সশস্ত্র লড়াই ও যুদ্ধের মাধ্যমে। এজন্য পার্শ্ববর্তী দেশ যদি মনে করে তারা এদেশের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে তাহলে তারা ভুল করবে।

জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মো.রতন মিয়ার সভাপতিত্বে এই সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক দল নেতা এস কে সাদী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের সভাপতি অধ্যক্ষ নুর আফরোজ বেগম জ্যোতি, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. নিজাম উদ্দিনসহ প্রমুখ।

কেএইচ/এএমএ/এএসএম