অতিরিক্ত কমিশনার
পুলিশ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়, পেশাদারত্বের বাইরে কাজ করার সুযোগ নেই
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী বলেছেন, পুলিশ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয় এবং আমরা জবাবদিহিতার মধ্য দিয়েই কাজ করে যেতে চাই। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনসেবার ব্রত নিয়ে আমরা শপথ গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, কাজেই এটা থেকে সরে আসার আমাদের কোনো উপায় নেই। একই সঙ্গে পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) কাফরুল থানা এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশ, ছাত্র-জনতা ও নাগরিকদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাসান মো. শওকত আলী বলেন, পুলিশ নাগরিকদের সেবার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা শুধু নাগরিকদের আমাদের পাশে চাই। স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে পুলিশ আপনাদের সঙ্গে কাজ করে যাবে, আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে। বর্তমানে নাগরিকদের সংখ্যার অনুপাতে পুলিশের সংখ্যা বেশ কম। তবুও এর মধ্য থেকে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পুলিশের একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব নয়, আপনাদের অংশগ্রহণও প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের সঙ্গে নিয়ে বীর শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। কাফরুল থানা এলাকায় কিছু সমস্যার কথা উঠে এসেছে। এর মধ্যে চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল, মাদক, কিশোর গ্যাং সমস্যা উল্লেখযোগ্য।
ফুটপাতের বিষয়টি কিছুটা সংবেদনশীল, এজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। মাদক, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং হল সামাজিক সমস্যা। তাই এই সমস্যাগুলো প্রতিরোধের জন্য পারিবারিক অনুশাসন চর্চা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি আমাদের পরিবারকে সচেতন করতে পারি, সমাজকে সচেতন করতে পারি তাহলে এই সমস্যাগুলো অনেকাংশে দূরীভূত হবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সমাজ বদলাচ্ছে, সময় বদলাচ্ছে, টেকনোলজি বদলাচ্ছে- তাই প্রত্যেকটি পরিবারে শৃঙ্খলার দায়িত্ব আমাদের সম্মানিত নাগরিকদেরকে নিতে হবে। সমস্যা সমাধানের জন্য আইনগত ব্যবস্থা থেকেও সামাজিক ব্যবস্থা বেশি শক্তিশালী।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও কাফরুল থানা এলাকার নাগরিক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে তাদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
কাফরুল থানা এলাকার নাগরিক এহসান বলেন, কাফরুল এলাকায় মূল সমস্যা হল ট্রাফিক আর চাঁদাবাজি। ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশের সাথে ছাত্রদের অংশগ্রহণ বেশ প্রশংসনীয়। চাঁদাবাজির মূল উৎস হল ফুটপাত, এ ব্যাপারে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ কামনা করছি।
সভায় উপস্থিত জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা চাই প্রশাসন ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করুক। এতে মাদক ও চাঁদাবাজি নির্মূল করা সহজ হবে। আমরা আপনাদেরকে সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি।
সভায় উপস্থিত এস এম একরাম আলী মনসুর আলী বলেন, মতবিনিময় সভা আয়োজনের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। সচরাচর এ ধরনের সভা বাইরের দেশে দেখা যায়। এখানে যে সমস্যাগুলো উঠে এসেছে তা সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা গেলে আমাদের দেশ একদিন উন্নত দেশের কাতারে চলে যাবে।
মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মিরপুর বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
টিটি/এমআইএইচএস/জেআইএম