পায়রা বন্দরের রাস্তা নির্মাণ
কলাপাড়ায় উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা ১৩৬ পরিবারের পুনর্বাসন দাবি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরের রাস্তা নির্মাণের জন্য উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা জিয়া কলোনিসহ ভূমিহীন ১৩৬ পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন দাবি করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন উচ্ছেদ আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। কলাপাড়া পরিবেশ ও জনসুরক্ষা মঞ্চ এবং বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ ও জনসুরক্ষা ফোরাম এ আয়োজন করে।
লিখিত বক্তব্যে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সদস্য ইব্রাহিম শিকারী বলেন, বাস্তুভিটাহীন হওয়ার কারণে ২০০৪ সালে তৎকালীন সরকার আমাদের আন্ধারমানিক নদীর পাড়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাসের সুযোগ দিয়েছিল। যার পর জঙ্গল সাফ করে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাস করে আসছি। বেড়িবাঁধের বাইরের দিকে বসবাস করার ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তারপরও মাছ ধরে, ইটভাটায় কাজ করে, নির্মাণশ্রমিক এবং কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবন যাপন করে আসছি। আমাদের এই বসতিতে একটি শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটা মাদরাসা এবং মসজিদ রয়েছে।
- আরও পড়ুন
সারজিসসহ আরও ৪৫ জন যুক্ত হলেন নাগরিক কমিটিতে
চিন্ময় দাশের গ্রেফতারে আওয়ামী লীগের নিন্দা, মুক্তি দাবি
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ লালুয়ায় অবস্থিত প্রথম টার্মিনাল থেকে টিয়াখালীতে প্রশাসনিক ভবন হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা আঞ্চলিক সড়কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিকল্প সড়ক হিসেবে পায়রা বন্দরের গেট থেকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পর্যন্ত বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণকাজ শুরু করেছে। এই রাস্তা নির্মাণ করতে আমাদের কলোনিসহ বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাসকারী আনুমানিক ১৩৬ ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করা হবে। আমরা যেখানে বসবাস করি সেই জমির মালিক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে আমাদের উচ্ছেদ করা হলেও কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন করা হবে না বলে জানতে পেরেছি।
অভিযোগ করে ইব্রাহিম শিকারী বলেন, একদিকে পায়রা বন্দরের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ হাজার ৪২৩ পরিবারকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। অন্যদিকে আমরা ভূমিহীন হওয়ায় আমাদের কোনো ধরনের পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ অথবা সহযোগিতা করা হচ্ছে না। ফলে আমরা নতুন করে বাস্তুভিটাহীন হতে যাচ্ছি। সরকারের প্রয়োজন হলে রাস্তা করবে তাতে আমাদের অসুবিধা নেই। কিন্তু আমরা যারা রাস্তার পাশে ভূমিহীন তাদের দিকে সরকার নজর দিক। আমরা কোনো চাকরি, ক্ষতিপূরণ, অন্য যে কোনো সুবিধা চাই না, শুধু আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে মাথা গোঁজার জায়গা চাই।
ইএআর/কেএসআর