ডিএমপি
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকে পুলিশ
রাজধানীর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে শিক্ষার্থীদের হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতেই এমন কৌশল বলে দাবি পুলিশের।
ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৫ নভেম্বর সকাল ৭টা থেকে রাজধানীর সূত্রাপুর ও ডেমরা এলাকায় পুলিশের পর্যাপ্ত জনবল মোতায়েন ছিল। মোতায়েন করা পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে উচ্ছৃঙ্খল ও মারমুখী শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মোল্লা কলেজের দিকে অগ্রসর হয়ে ওই কলেজে হামলা চালায়। পুলিশ যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকে।
পরিস্থিতি ভিন্নখাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এরপরও উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং হামলা ও লুটতরাজে জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন
ডিএমপি জানায়, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ এবং মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের জেরে প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লিখিত ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন বলে অনেকেই অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা মোটেই সঠিক নয়। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এরূপ অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
তিনি বলেন, গত ১৬ নভেম্বর শনিবার ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হালদার ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১৮ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতে তার পরিবার ও কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। ২০ নভেম্বর আবারও মোল্লা কলেজের ৫০০-৬০০ শিক্ষার্থী ওই হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়।
ডিসি তালেবুর রহমান আরও বলেন, এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এসময় প্রতিবাদকারীদের চাপে হাসপাতালের পরিচালক ৪ জন চিকিৎসক ও দুজন শিক্ষার্থীসহ অভিজিতের চিকিৎসা সংক্রান্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু ওই সময় হাসপাতাল চত্ত্বরে অবস্থানরত মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে আসে। এ সময় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা তা না মানায় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের দুই ছাত্র আহত হয়। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পুনরায় ভাঙচুর চালায়। এক পর্যায়ে তারা সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজেও ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
আরও পড়ুন
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজের প্রায় ১২-১৫ হাজার শিক্ষার্থী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও বাহাদুর শাহ পার্কে জমায়েত হয়ে বেলা ১১টার দিকে ডেমরার মোল্লা কলেজের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। আগে থেকে পুলিশ ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে অবস্থান করে। কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল ও মারমুখী শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা প্রতিহত করে লাঠিসোঠাসহ মোল্লা কলেজের দিকে অগ্রসর হলে যাত্রাবাড়ী মোড়ে পুলিশ পুনরায় বাধা দেয়। কিন্তু তারা বাধা অতিক্রম করে ওই কলেজে পৌঁছে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা আরও জানান, ৩৫টি বিভিন্ন কলেজ শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ইউনাইটেড কলেজ অব বাংলাদেশ (ইউসিবি) নামে একটি ফোরাম গঠিত হয়। অন্যদিকে রাজধানীর ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ ও সরকারি কবি নজরুল কলেজ মিলে সাত কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের একটি জোট রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ৩৫ কলেজের ফোরাম ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পরস্পরের প্রতি ঘৃণার মনোভাব সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন
ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ২৫ নভেম্বর সকাল ৭টা থেকে রাজধানীর সূত্রাপুর ও ডেমরা এলাকায় পর্যাপ্ত জনবল মোতায়েন করা হয়। মোতায়েন করা পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। তথাপি উচ্ছৃঙ্খল ও মারমুখী শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মোল্লা কলেজের দিকে অগ্রসর হয়ে ওই কলেজে হামলা চালায়। পুলিশ যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকে।
পরিস্থিতি ভিন্নখাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এরপরও উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং হামলা ও লুটতরাজে জড়িয়ে পড়ে।
টিটি/এমকেআর/এমএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ১৮ বছর পর দেশে ফিরলেন রবিউল, বাবাকে ছুঁয়ে দেখলো তিন সন্তান
- ২ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও প্রতিষ্ঠায় তরুণদের এগিয়ে আসা জরুরি
- ৩ সাবেক মুখ্যসচিব তোফাজ্জলের দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে
- ৪ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক ট্যুরিস্ট স্পটে রূপ দিতে চাই
- ৫ সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র: জাতীয় নাগরিক কমিটি