ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার দাবি
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা (আদেশ) পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক নীতিমালা চূড়ান্ত ও আধুনিকায়ন করে নিবন্ধন, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট প্রদান এবং চালকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তারা বলেন, গত তিনদিন আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দেশের জন্য আমাদের অনেক অবদান ছিল। জুলাই আন্দোলনের সময় রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স, গাড়ি কিছুই ছিল না। সে সময় অটোরিকশাই ছিল একমাত্র ভরসা। আমরা সবাই স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরোধী ছিলাম। আমাদের সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ করবেন না। হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনা করুন।
ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, গত তিনদিন বিভিন্ন এলাকায় আমাদের হয়রানি করা হয়েছে। কারা শ্রমিকের বুকে লাথি মারলো, এটা সরকারকে বের করতে হবে। গত ১২ বছর ধরে রাজপথে লড়াই করেছি। আমরা বার বার বলেছি, ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য নীতিমালা তৈরি করুন। আমরা আলাদা রুটের জন্য বলে আসছি ২০১২ সাল থেকে। (জুলাই-আগস্টে) ৩৬ দিনের আন্দোলনে আমাদের রিকশাচালকরা সবার পাশে ছিলেন। জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে আমাদের চালকরা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। গত ২৪ অক্টোবর নীতিমালার বিষয়ে সরকারকে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। এরপর হঠাৎ করে হাইকোর্ট থেকে আমাদের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হলো। আমাদের অনুরোধ, আদালতকে ব্যবহার করে আমাদের পেটে লাথি মারবেন না।
সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে নীতিমালার বিষয়ে সুরাহা করতে হবে। তা না হলে ৩০ নভেম্বর আমরা দেশের ৬৪ জেলায় সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে সমাবেশ করবো।
- আরও পড়ুন
- ঢাকা মহানগরে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ
- জুরাইনে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, রেললাইন অবরোধ
এসময় তারা কয়েকটি দাবি জানান। সেগুলো হলো-
নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন, চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট প্রদান করা। কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন করা।
চালক-মেকানিক-মালিকসহ ৬০ লাখ ও তাদের ওপর নির্ভরশীল আড়াই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ করা যাবে না।
ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা চালকসহ নিহত-আহত সব শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় বন্ধ করতে ইলেকট্রিক বা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা।
সব সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত স্বল্প গতির ও লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস রোড/বাই লেন নির্মাণ করে সড়কে বিশৃঙ্খলা দূর ও দুর্ঘটনা নিরসন করা।
ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক জব্দ বন্ধ করা ও জব্দ করা রিকশা ও ব্যাটারি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান তারা।
আরএএস/কেএসআর/এএসএম