ইয়াং অ্যাক্টিভিস্ট সামিট লরিয়েট সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশি সোহান
বিশ্বজুড়ে তরুণ কর্মীদের অসামান্য কাজের স্বীকৃতি দিতে এই অনুপ্রেরণামূলক ইভেন্টের ষষ্ঠ সংস্করণ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার) জেনেভায় জাতিসংঘ দপ্তর প্যালাইস ডেস নেশনসে অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে সোহানসহ বিশ্বের পাঁচজন তরুণ নেতাকে তাদের অসামান্য নেতৃত্বের জন্য ইয়াং অ্যাক্টিভিস্ট সামিট ২০২৪ লরিয়েট সম্মাননা পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
ইয়াং অ্যাক্টিভিস্ট সামিট অর্থবহ পরিবর্তনের জন্য নিজ নিজ জনগোষ্ঠীকে অনুপ্রাণিত ও সংগঠিত করার জন্য বাংলাদেশের জলবায়ু কর্মী সোহানুর রহমানসহ ১৯ থেকে ২৯ বছর বয়সী অনুপ্রেরণাদায়ী পাঁচ তরুণকে সম্মানিত করেছে।
অন্যান্য বিজয়ীরা হলেন মার্লে ডায়াস, ১৯, ইউএস (মিডিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিনিধি); শানলি ম্যাকলারেন, ২৫, ফ্রান্স (অনলাইন লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা); আলভারো কুইরোজ, ২৫, মেক্সিকো (গৃহহীনদের সাহায্য করা); এবং সিনথিয়া হোউনিউহি, ২৯, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ (জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার)।
সোহানুর রহমান বিশ্বজুড়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনকারীদের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে জলবায়ু ন্যায়বিচারের পক্ষ্যে কথা বলেছেন এবং তিনি সম্মেলনে বাংলা ভাষায় তার জোরালো বক্তৃতা দিয়েছেন।
সামিটের এ বছরের থিম, ‘দূরে যাও, একসাথে যাও’ সুন্দরভাবে অর্থপূর্ণ পরিবর্তন আনতে সম্মিলিত কর্মের শক্তিকে তুলে ধরে।
২০১৯ সালে সূচনা থেকে ইয়াং অ্যাক্টিভিস্ট সামিট মানবাধিকার রক্ষা এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তরুণ পরিবর্তনকারীদের ক্ষমতায়ন এবং সংযুক্ত করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করেছে।
সোহানুর তার সাহসী সহকর্মী শ্রাবণসহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহিদ ও আহত সমস্ত তরুণ যোদ্ধাদের এবং এই বিশ্বকে আরও ভালো, আরও সুন্দর জায়গা করে তোলার জন্য প্রতিদিন প্রচেষ্টারত সমস্ত অক্লান্ত জলবায়ু যোদ্ধাদের এই পুরস্কার উৎসর্গ করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইয়াং অ্যাকটিভিস্ট সামিট ২০২৪ লরিয়েট সম্মাননা প্রাপ্তিতে সোহানুর রহমানকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছে, ‘বিশ্ব ও বাংলাদেশের সোহানুর রহমানের মতো তরুণ পরিবর্তনকর্মীদের প্রয়োজন।’
ইইউ বলেছে, বাংলাদেশি যুবকদের একটি টেকসই, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার প্রচেষ্টায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইইউ জানায়, সোহানুর রহমান তার সংস্থা ইয়ুথনেটের সাথে জলবায়ু ন্যায়বিচার নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মনোনীত হয়েছেন।
জেনেভায় অবস্থানকালে সোহানুর জেনেভায় জাতিসংঘে ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান ইইউ রাষ্ট্রদূত লোটে নুডসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি ইইউ প্রতিনিধি এবং ইইউ সদস্য রাষ্ট্র মিশনের তরুণ পেশাদারদের সাথেও আলোচনা করেছেন।
সোহানুর রহমান তার উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্মক প্রভাব প্রত্যক্ষ করে এটি মোকাবিলার পদক্ষেপ নিতে মনস্থির করেন।
ইয়ুথনেট গ্লোাবালের নির্বাহী সমন্বয়ক হিসেবে তিনি জলবায়ু ন্যায়বিচারের আহ্বান জানাচ্ছেন- যুবদের ক্ষমতায়ন করছেন, নিজ জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর জোরদার করছেন এবং তৃণমূল পর্যায়ে এমন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছেন যা বৈশ্বিক পরিবর্তনে অনুপ্রাণিত করছে।
সোহান ২০১৬ সালে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জলবায়ু সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১৯ সালে ইয়ুথনেটের নেতৃত্বে একটি প্রচারণা বাংলাদেশের সংসদকে জলবায়ু সংকটকে গ্রহের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার জন্য নেতৃত্ব দেয়। ইয়ুথনেট এছাড়া ১০টি কয়লা প্ল্যান্ট নির্মাণ বন্ধ করতে সাহায্য করেছে।
সম্প্রতি, সোহানুর ও তার দল বাংলাদেশে বৃহত্তর গণতন্ত্রের পক্ষে ছাত্র নেতৃত্বাধীন জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। সোহানুর অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডায় জলবায়ু পদক্ষেপকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছেন।