অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে প্রচেষ্টা চলছে: ড. ইউনূস
অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সহস্রাধিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে হাইকোর্টে ২৩ জন নতুন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগকে ঘুস ও দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য সম্ভব সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
রোববার (১৭ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচারপতিদের নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করা হয়েছে। শুধু বিচার বিভাগই নয়, সর্বগ্রাসী দুর্নীতির হাত থেকে দেশের সব খাতকেই রক্ষা করতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পুনর্গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দুর্নীতি ও অর্থপাচারে অভিযুক্ত প্রভাবশালী দেড়শ ব্যক্তির তালিকা তৈরি এবং ৭৯ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিল হয়েছে।’
- আরও পড়ুন
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অক্টোবরে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশ
কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকায় আসছেন ২৭ দেশের রাষ্ট্রদূতরা
তিনি বলেন, ‘সরকারি কার্যক্রম গতিশীল করতে বিভিন্ন পর্যায়ের ১৯ হাজার ৮৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি, ১৩ হাজার ৪২৯ জনকে বদলি এবং ১২হাজার ৬৩৬ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে। কুখ্যাত সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ আইনের অধীনে হওয়া যেসব মামলা মানুষের মত প্রকাশের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত সেগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও ১৩৩টি আইন, বিধিবিধান তৈরি ও সংশোধন করা হয়েছে এবং ৩৫৩টি গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি মেনে এরই মধ্যে সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩২ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। আমরা জানি আমাদের কাছে আপনাদের আরও অনেক দাবি-দাওয়া আছে। দীর্ঘদিনের অপশাসন, অত্যাচার, অনাচারের ফলে আপনাদের মনে অনেক ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে। দেশে বাক স্বাধীনতা না থাকায় আমরা কেউ আমাদের মতামত, দাবি-দাওয়া প্রকাশ করতে পারিনি। আমরা আপনাদের সব দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। আমরা ধৈর্য্য সহকারে আপনাদের কথা শুনতে চাই। কিন্তু সেজন্য আপনারা সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আমাদের সবারই অসুবিধা হয়।’
এসময় নির্দিষ্ট চ্যানেল মেইনটেইন করে দাবি-দাওয়া পেশ করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এমইউ/কেএসআর/এএসএম