‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি নেওয়ার এখনই সময়’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, বিশ্ব সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকেও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার এখনই সময়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প বিপ্লবেও কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে এবং যারাই দ্রুত প্রস্তুতি নিতে পেরেছেন তারাই প্রয়োজনীয় সাফল্য পেয়েছেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) যৌথ উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন দক্ষতা উন্নয়ন, কৌশলগত পরিকল্পনা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নেটওয়ার্কিং।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে বাংলাদেশ বর্তমানে ১৯৬০ সালের জাপান এবং ২০০০ সালের চীনের মতো অবস্থানে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে ঝুঁকি তৈরি হবে তা প্রশমনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই সময়।
তিনি আরও বলেন, কাঠামোগত পরিবর্তন ও সুবিধার কারণে যে সমস্ত শ্রমিকের ঝরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার ও মালিকের পাশাপাশি শ্রমিকদের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন ঘটিয়ে তাদের সামনে এগিয়ে নিতে ট্রেড ইউনিয়নকে নিয়মিত কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অনন্য রায়হান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এনসিসিডব্লিউ এর চেয়ারম্যান বাদল খান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জনতা ব্যাংকের সাবেক মহাব্যবস্থাপক ও আইটি বিশেষজ্ঞ চয়নুল হক চয়ন প্রমুখ।
অনন্য রায়হান বলেন, বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখ মানুষ কল সেন্টারে কাজ করছে। এ ছাড়া গিগ অর্থনীতি ও প্ল্যাটফর্ম অর্থনীতিতে আরও লাখ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শিল্পক্ষেত্রে আসছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তবে অটোমেশনের কারণে নারী শ্রমিকদের ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২২ সালে যন্ত্র ও মানুষের কাজের অনুপাত যেখানে ছিল ৪৪ শতাংশ ও ৬৬ শতাংশ , যেখানে ২০৩৫ সালে এটি ৫৭ শতাংশ ও ৪৩ শতাংশ হবে। ২০৪১ সালে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তবে নতুন ধরনের কিছু কাজও তৈরি হবে।
আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, শ্রমিকের সঠিক সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের নৈতিক মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে বিবেচনায় নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
এসএম/এসআইটি/জেআইএম