সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
ছাত্রদের সুপথের সন্ধান দিলে সামনের দিনে প্রধান শক্তি হবে বামরা
দেশে একেবারে ঝিমিয়ে পড়া বামপন্থিরা কীভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রধান শক্তি হয়ে উঠতে পারে, সেই পথ বাতলে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘যে ছাত্ররা এখন বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরছেন, যারা পথের সন্ধান পাচ্ছেন না; তাদের সুপথের সন্ধান দিতে হবে। তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে দেখা যাবে এদেশে বামপন্থিরাই প্রধান শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
কীভাবে সুপথে আনতে হবে সেই পথও দেখিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। প্রথিতযশা এ শিক্ষাবিদের ভাষ্য, ‘ভাষা আন্দোলনে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়েছিল। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিল, ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল। তেমনিভাবে বামপন্থিদের একটা যুক্তফ্রন্ট গঠন করে দেশের প্রত্যেক প্রান্তে সর্বত্রই যুক্তফ্রন্ট গঠন করতে হবে। তাহলেই তারা শক্তিশালী হয়ে উঠবেন।’
রোববার (১০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বামপন্থিদের ভূমিকা এবং করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাবেক আহ্বায়ক আ ফ ম মাহবুবুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আইয়ুব খানের আমলেও ছাত্রসংসদ জীবন্ত ছিল, এখন মৃত
স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের আমলেও নিয়মিত ছাত্রসংসদ নির্বাচন হতো। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রায় ৩৪ বছর ছাত্রসংসদ মৃত অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন থেকে শুরু হয়েছে, তখন থেকেই ছাত্রসংসদ নির্বাচন হতো। সেই ছাত্রসংসদের অনুষ্ঠানে বিতর্কে উপাচার্যও অংশ নিতেন। সেখানে বক্তৃতা হতো, সাংস্কৃতিক চর্চা হতো। এমনকি আইয়ুব খানের সময়ও ছাত্রসংসদের নির্বাচন হয়েছে, ছাত্রসংসদ জীবন্ত ছিল।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে যখন সামরিক শাসন এসেছে, তখনও ছাত্রসংসদ ছিল। কিন্তু এরশাদের শাসনামলের পর থেকে প্রায় ৩৪ বছর চলে গেলো, কোনো ছাত্রসংসদ নির্বাচন হলো না, প্রকৃত কোনো নির্বাচনও হলো না। সব সরকার ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে ভয় পেয়েছে।’
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শাসক শ্রেণি প্রকৃত কোনো নির্বাচনকে কতটা ভয় পায়, তা ছাত্রসংসদ নির্বাচনবিমুখ হওয়া থেকে বোঝা যায়। একটা সময় আইয়ুব খান ও ইস্কান্দার মির্জা ভয় পেয়েছিলেন যে, নির্বাচন হলে বামপন্থিরা চলে আসবে। এখনও হয়তো তেমনই ভয় রয়েছে।
এএএইচ/এমআরএম/জিকেএস