ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বাতিল হচ্ছে শেখ পরিবারের নামে থাকা সব পুরস্কার

মাসুদ রানা | প্রকাশিত: ০৮:২০ এএম, ১০ নভেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ছয়টি পুরস্কার চালু করা হয়। এসব পুরস্কারের কার্যক্রম এখন বন্ধ। এরই মধ্যে কিছু পুরস্কার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো কোনোটি বাতিল করার প্রক্রিয়া চলমান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

তথ্যমতে, বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক, শেখ রাসেল পদক, বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার বাতিল বা নাম পরিবর্তন হচ্ছে।

কর্মকর্তারা আরও জানান, গুরুত্ব বিবেচনায় দু-একটি পুরস্কার থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে নামের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যেতে পারে পুরস্কারের ধরন।

এর আগে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে নামকরণ করা বিভিন্ন সরকারি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আরও কিছু নাম পরিবর্তন করা হতে পারে।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার

কৃষিখাতে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার। সবশেষ ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪২৫ ও ১৪২৬ বঙ্গাব্দের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার দেন। ওইদিন ১০টি ক্যাটাগরিতে মোট ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

কৃষি ও কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল’ গঠন করেন। পরে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল’ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ‘জাতীয় কৃষি পুরস্কার তহবিল আইন’ সংশোধন করে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার তহবিল আইন’ করা হয়। একই সঙ্গে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন, ২০১৬’ প্রণয়ন করা হয়।

এ পুরস্কার দিতে ১৩ সদস্যের ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন কৃষিমন্ত্রী। দশটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হয়। এছাড়া বিজয়ীরা সনদ ও নগদ টাকা পান। স্বর্ণ পদকপ্রাপ্তরা এক লাখ টাকা, রৌপ্য পদকপ্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা ও ব্রোঞ্জপ্রাপ্তরা ২৫ হাজার টাকা পান।

১৪২৭ ও ১৪২৮ বঙ্গাব্দের এ পুরস্কার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কার্যক্রম আর এগোয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতি। যে আইনের ভিত্তিতে এ পুরস্কারটি দেওয়া হয় সেটি দেখতে হবে। তবে এ মুহূর্তে এটা নিয়ে কোনো কার্যক্রম নেই। পরবর্তীসময়ে এটা দেখে যাচাই-বাছাই করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতি। যে আইনের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার দেওয়া হয় সেটি দেখতে হবে। তবে এ মুহূর্তে এটা নিয়ে কোনো কার্যক্রম নেই। পরবর্তীসময়ে এটা দেখে যাচাই-বাছাই করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।- কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান

নাম বদলে ভিন্ন কাঠামোতে এ পুরস্কারটি দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, কৃষিক্ষেত্রে অবদান রাখার স্বীকৃতির সুযোগ রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার

বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এজন্য চলতি বছরের ২০ মে মন্ত্রিসভা বৈঠকে একটি নীতিমালাও অনুমোদন দেওয়া হয়। এ পুরস্কারটিও বাতিলের জন্য মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

২০ মে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক নীতিমালা, ২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এ পুরস্কারটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এ পুরস্কারের বিষয়ে তখনকার মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, প্রতি দুই বছর এ পুরস্কার দেওয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক্ষেত্রে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে। পুরস্কারের মূল্যমান এক লাখ মার্কিন ডলার ও ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক। সাধারণত প্রতি দুই বছরে দেশি বা বিদেশি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হবে। ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে পুরস্কার দেওয়া হবে। আগামী বছর (২০২৫) প্রথমবারের মতো এ পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এ পুরস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এটি আর এগোয়নি। এ পুরস্কারের বিষয়ে কোনো কার্যক্রম নেই। এটি উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করা হবে। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হবে, সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক

২০২২ সালে ‘জনপ্রশাসন পদক’ এর নাম বদলে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ করা হয়। এজন্য ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা ২০১৫ (২০১৬ সালে সংশোধিত)’ বাতিল করে ২০২২ সালে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০২২’ করে সরকার।

ব্যক্তি, দল ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের সংখ্যা ১২টি। পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সংবলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত অবদানের জন্য দুই লাখ ও দলগত অবদানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা হবে পাঁচজন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

প্রতি বছর ২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপনের অংশ হিসেবে এ পদক দেওয়া হয়।

জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদের সৃজনশীল ও গঠনমূলক কার্যক্রম উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিত করা ও সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অধিকতর গতিশীল করতে পুরস্কার থাকার দরকার রয়েছে। তাই এ পুরস্কারটি হয়তো থাকবে, তবে নাম পরিবর্তন হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও প্রশিক্ষণ (সিপিটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ পুরস্কার নিয়ে এখন কোনো কার্যক্রম নেই। পরবর্তীসময়ে কী হবে, সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।’

শেখ রাসেল পদক

প্রতি বছর ১৮ অক্টোবর পালন হতো শেখ রাসেল দিবস। ২০২২ সালে প্রতি বছর শেখ রাসেল পদক দিতে নীতিমালা করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে শেখ রাসেল দিবস বাতিল করা হয়েছে।

এই পুরস্কারটা আর থাকবে না। এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এটা কীভাবে কোন ক্ষেত্রে কী নামে দেওয়া যায় সে বিষয়ে আমরা পরবর্তীসময়ে সিদ্ধান্ত নেবো।– শেখ রাসেল পদক বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী

শিশু-কিশোর এবং তাদের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানকে অনুপ্রেরণা, উৎসাহ-উদ্দীপনা জোগানো এবং স্বীকৃতি দিতে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শেখ রাসেল পদক দেওয়া হতো। পুরস্কারপ্রাপ্তরা ২২ ক্যারেটের এক ভরি ওজনের স্বর্ণের পদক, সনদ ও উন্নতমানের ল্যাপটপ পেতেন।

এ পুরস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই পুরস্কারটা আর থাকবে না। এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এটা কীভাবে কোন ক্ষেত্রে কী নামে দেওয়া যায় সে বিষয়ে আমরা পরবর্তীসময়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’

বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ পুরস্কার দেয়।

বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান এবং বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, খ্যাতিমান গবেষক, বিজ্ঞানী, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মী/ব্যক্তিত্ব ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ এর প্রতিটি শ্রেণিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দুই ভরি (২৩.৩২ গ্রাম) ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ ও ৫০ হাজার টাকার চেক এবং সনদ দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছর এ পুরস্কারের জন্য কোনো কার্যক্রম নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ পুরস্কারটি থাকবে না। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার নীতিমালা, ২০২২’ অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার’ দেয়। বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, মাইক্রো, কুটির, হস্ত ও কারুশিল্প এবং হাইটেক শিল্পের সঙ্গে জড়িত শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার নগদ তিন লাখ টাকা, ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট ও একটি রেপ্লিকা। দ্বিতীয় পুরস্কার নগদ দুই লাখ টাকা, ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট ও একটি রেপ্লিকা এবং তৃতীয় পুরস্কার নগদ এক লাখ টাকা, ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট ও একটি রেপ্লিকা।

এ পুরস্কারটিও বাতিল করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারও বাতিল হচ্ছে বলে শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার বাতিলের জন্য আমরা এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে লিখেছি। সিআইপি প্রদান ছাড়া সব পুরস্কার বাতিলের জন্য আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে লিখিত জানিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের তিন-চার রকমের পুরস্কার রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছিল। কর্মকর্তাদের পুরস্কারের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে বছরের বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হতো। তাই সিআইপি রেখে আপাতত অন্য সব পুরস্কার বাতিলের জন্য বলেছি। সেখানে জাতীয় পুরস্কার প্রদান সংক্রান্ত একটি উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে। এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।’

আরএমএম/এএসএ/এমএমএআর/এমএস