ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

রায় শুনলেন নিজামী

প্রকাশিত: ০৩:০২ পিএম, ০৯ মে ২০১৬

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর সাজা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজের রায় তাকে পড়ে শোনানো হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার পরপরই সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবীর, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম হায়দার তাকে রায়টি পড়ে শোনান।

জাহাঙ্গীর কবীর নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এরআগে সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ডেপুটি রেজিস্ট্রার কেশব রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে চার কর্মকর্তা লাল ফাইলে মোড়ানো রায়ের কপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে দেন।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গির কবীর রায়ের কপি গ্রহণ করেন।

সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে ফাঁসি কার্যকরের আদেশ দেবে কারা কর্তৃপক্ষকে। লিখিত চিঠি পাওয়ার পরই অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রায় কার্যকর করা হবে। রায় কার্যকরের আগে সর্বশেষ ধাপে এখন কেবলমাত্র নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পর আবেদন নাকচ হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।

দুপুরের দিকে পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারকদের সইয়ের পর বিকেলে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায় ওই রায়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে রায়ের এই অনুলিপি পৌঁছে দেয়া হয় কেন্দ্রীয় কারাগারে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে রায় প্রদানকারী চার বিচারপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ২২ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে।

নিজামী হলেন পঞ্চম মানবতাবিরোধী অপরাধী ও তৃতীয় মন্ত্রী, যার সর্বোচ্চ সাজার রায় কার্যকরের পর্যায়ে এসেছে। এর আগে সাবেক মন্ত্রী জামায়াতের আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।   

ফাঁসির দণ্ড থেকে বাঁচতে মানবতাবিরোধী এ অপরাধীর সামনে এখন খোলা একটিই মাত্র পথ- তা হলো রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা। নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর, যদি ক্ষমা না পান তবে আইন অনুযায়ী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে যেকোনো সময় ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ।  তবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেছেন, যারা ইসলামী আন্দোলন করেন তারা শহীদী তামান্না নিয়ে কাজ করে। ইসলামী আন্দোলনের সৈনিকরা ফাঁসির রশিতে ভয় পান না। নিজামী আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে মাথা নত করবেন না, তাই রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

সোমবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, নিজামীর দণ্ড কার্যকর এখন সরকারের বিষয়। সরকার নির্ধারিত সময়ে কারা কর্তৃপক্ষ তা কার্যকর করবে।

২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করার পর একই বছরের ২ অগাস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বর্তমানে নিজামী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি ষষ্ঠ মামলা, যার চূড়ান্ত রায় হল। এর আগে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আরো পাঁচটি মামলা আপিলে নিস্পত্তি হয়েছে। চূড়ান্ত পাঁচটি রায়ের পর চারটিতে জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। আপিলের আরেক রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এআর/জেইউ/এনএফ/এবিএস

আরও পড়ুন