ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে: ফরহাদ মজহার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:২৬ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২৪

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, নির্বাচন আমাদের জন্য মোটেও কোনো কিছুর সমাধান নয়। বিএনপিকে বলবো নির্বাচন সমাধান নয়। নির্বাচন আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু নির্বাচনের আগে সর্বপ্রথম গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে। একটা নতুন খসড়া তৈরি হবে, সেই খসড়ার আলাপ আলোচনা করার জন্য গণপরিষদের নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, যতক্ষণ তুমি জনগণের অভিপ্রায় ধারণ করো ততক্ষণ আমি তোমাকে মানি। কিন্তু যখন তুমি জনগণের অভিপ্রায় থেকে সরে গেছো, যেমন শেখ হাসিনাকে যেভাবে পতন করা হয়েছে। ঠিক তোমাকেও পতন করা হবে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি এন্ড পিস স্টাডিজের উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আশা করবো বিএনপি অনেক দায়িত্বশীল ভাবে কথা বলবেন। বাংলাদেশে বর্তমানে আমরা যে দুর্বল মুহূর্তে পড়ে গেছি, এই সময় বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল; তাদের কাছে অনেক বেশি দায়িত্ব আশা করি। বিএনপি কেন রাষ্ট্রপতিকে রাখতে চায় আমি কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না। এটার কোন সাংবিধানিক যুক্তি এবং রাজনৈতিক যুক্তি নেই। এই তথাকথিত ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে ঢুকানোটাই ভুল ছিল। এই ভুলটা সংশোধন করার উপায় হচ্ছে প্রথমত রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা এবং একই সঙ্গে ঘোষণা দেওয়া যে শুরুতে ভেবেছিলাম সাংবিধানিকভাবে আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে পারবো। কিন্তু রাষ্ট্রপতি যখন বললেন তার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ পত্র নেই ; তিনি (রাষ্ট্রপতি) আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার ওইখানে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। তাকে অপসারণের মধ্য দিয়ে এই যে সরকার, যেটা সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার। এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়।’

তিনি বলেন, ‘সেনা প্রধানের সাপোর্টের কারণে এই সরকার এখনো টিকে আছে। সেনাপ্রধান যদি এই সরকারকে সমর্থন না করেন তাহলে সরকার মুহূর্তের ভিতরেই পড়ে যাবে। তার শুভবুদ্ধির উপর ভিত্তি করে এটা দাঁড়িয়ে আছে। আমরা সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার চাই না। আমাদের সৈনিকরাও চায় না। সৈনিকরা গুলি করতে অস্বীকার করেছিল বলে এই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। শ্রমিকদের অভিপ্রায়ের সঙ্গে আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি আমাদের অভিপ্রায় মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যে রাষ্ট্র জনগণের অভিপ্রায়কে প্রতিনিধিত্ব করে। জনগণের অভিপ্রায়ের প্রতিনিধিত্ব হবে তখন, যখন আমরা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করবো। তারা স্বীকার করবে আমরা ভুল করেছি, ভুল হতেই পারে; তবে আমরা শুধরাতে চাই। এখন আমাদেরকে অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে ঘোষণা করুন। আমরা অধ্যাদেশ হতে চাই না। একটু সাবধানে থাকতে হবে। তারা কিন্তু আবার পুরনো সংবিধানের নামে অধ্যাদেশ করার চেষ্টা করবে। আমরা কোনো অধ্যাদেশ মানবো না। ’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকারের একটাই প্রধান দায়িত্ব সেটা হলো এই দেশকে একটি নতুন গঠনতন্ত্র অথবা একটি সংবিধান উপহার দেওয়া। নতুন গঠনতন্ত্র কি করে হবে এটা করার জন্য আপনারা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। জনগণের অভিপ্রায় আপনারা জনগণের কাছে এসেই শুনতে হবে। আমরা পরস্পরে আলাপ-আলোচনা করে একটা জায়গায় আসবো যেটা জনগণের সমষ্টির অভিপ্রায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা ইলেকশন করাটা হলো একটি বাজার ব্যবস্থা ব্যবসা। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইলেকশন কখনো গণতন্ত্রকে রিপ্রেজেন্ট করে না। নির্বাচনের সময় ভোট কেনাবেচা করে এটাতো জনগণের অভিপ্রায় নিশ্চিত হবে না। আমরা চেয়েছি জনগণের অভিপ্রায় নিশ্চিতকরণ। যাদের কাছে টাকা আছে বিশেষ করে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণি তারাই এই ইলেকশনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাবে। আমি আপনি কেউ রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে অংশগ্রহণ করতে পারবো না। এখন এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে যেখানে সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারে। সেই নীতি আমাদের সংবিধানে এখনো আছে। সংবিধানের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রের সব প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনগণের প্রতিনিধির দ্বারা প্রশাসন চলবে। প্রশাসন এক জিনিস ক্ষমতা আরেক জিনিস। ক্ষমতা সব সময় তৈরি হয় জনগণের দ্বারা।’

আরএএস/এসআইটি/এএসএম