ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নিয়ে গার্লফ্রেন্ডকে দিতেন অনিক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৫৭ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

তরুণীদের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে স্পর্শকাতর ছবি হাতিয়ে নিতেন হ্যাকার মো. ফজলে হাসান অনিক (২৪)। তারপর সেসব ছবি ভুক্তভোগীর আত্মীয়দের পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে হাতিয় নিতেন অর্থ। সেসব অর্থ দিয়ে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি গার্লফ্রেন্ডের খরচও বহন করতেন গ্রেফতার হ্যাকার অনিক।

গত দুই বছরে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অন্তত ১৫ জনকে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা আদায় করেছেন এই যুবক। অবশেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে ধরা খেয়েছে অনিক।

গ্রেফতার মো. ফজলে হাসান অনিক একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের নেংটাদাহ গ্রামে। তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের ডিআইজি এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গ্রেফতার হ্যাকার গত দুই বছর ধরে অর্ধশতাধিক ভুক্তভোগীর ফেসবুক আইডি হ্যাক এবং ১৫ জনের বেশি ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নিয়ে গার্লফ্রেন্ডকে দিতেন অনিক

এই হ্যাকারের বিরুদ্ধে একজন ভুক্তভোগী সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে অভিযোগ দেয়। একই সঙ্গে পুলিশ সদরদপ্তরের পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন থেকেও একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার ছায়া তদন্ত করে অপরাধের ধরন ও হ্যাকারকে শনাক্ত করে।

এরপর রোববার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অভিযান চালিয়ে মো. ফজলে হাসান অনিককে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে অপরাধে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়।

হ্যাকিং সম্পর্কে ডিআইজি নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর আগস্ট মাসে অভিযোগকারী ভুক্তভোগীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি লিংক আসে। তিনি না বুঝেই ওই লিংকে ক্লিক করে ফেসবুক ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করেন। ঠিক তখনই ঘটে বিপত্তি, ভুক্তভোগীর ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড চলে যায় হ্যাকারের দখলে। হ্যাকার ভুক্তভোগীর ফেসবুকের মেসেঞ্জার থেকে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করেন।

পরে হ্যাকার ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও তার আত্মীয়স্বজন এবং পরিচিতদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কয়েক ধাপে কৌশলে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর যখনই টাকার দরকার হতো, তখনই ভুক্তভোগীবেক ব্ল্যাকমেইল করতেন গ্রেফতার অনিক।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, হ্যাকার অনিক ব্ল্যাকমেইলিংয়ের টাকা দিয়ে ঢাকায় নিজের খরচ চালাতেন। তারও এক গার্লফ্রেন্ড আছে। ওই গার্লফ্রেন্ডের সব খরচ তিনি এভাবে আইডি হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইল করে চালাতেন। তিনি এটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন। পুলিশ যেন ধরতে না পারে, এজন্য তিনি বিকাশ-নগদে টাকা না নিয়ে বিভিন্ন সুপারশপে যেতেন। শপে কেনাকাটা করে ভুক্তভোগীদের বলতেন বিকাশ বা নগদে বিল দিতে। আরেকভাবে তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা নিতেন। তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট আছে, ওই অ্যাকাউন্টে তিনি টাকা নিয়ে নিতেন। যে কারণে তাকে সহজে ট্রেস করা যেতো না। সিআইডি বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে ট্রেস করতে সক্ষম হয়।

টিটি/ইএ/জেআইএম