রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়টি এখন রাজনৈতিক: রিজওয়ানা হাসান
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়টি এখন রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের (উপদেষ্টা পরিষদ) আলোচনা হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো বলে আমরা আশা করি।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু দাবিটা ক্রমান্বয়ে জোরালো হচ্ছে এটা এক ধরনের গণদাবি। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের অবস্থান ও সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
রাষ্ট্রপতির বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাষ্ট্রপতি কি বলেছেন সেটা আমাদের নজরে আনা হয়েছে। তার পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে সেটাও বিবেচনা হচ্ছে। একই সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক দল যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগে সাংবিধানিক সংকট হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে, সেটাও আলোচনা হয়েছে। আবার ওই দলের দু-একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন সাংবিধানিক সংকট হবে না।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের জোরালো দাবির বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। যদিও তাদের (রাজনৈতিক দল) সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে বলেননি।
পদত্যাগ করা হলে সাংবিধানিক কোন ধারা মতে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেওয়া হবে এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা হাসান বলেন, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমি ঘোড়ার আগে গাড়ি নিয়ে গেলে সমস্যা। এ মুহূর্তে কথা হচ্ছে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের দাবি নিয়ে আমরা কীভাবে ডিল করবো। আমরা বলেছি এটি রাজনৈতিক বিষয়। যেহেতু দাবিটা জনগণ থেকে এসেছে, আমাদের সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে এসেছে, কাজেই সংবিধানের প্রত্যেকটা বিষয় আক্ষরিক অর্থে মানা সম্ভব হবে কি না? রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে সেখানে ব্যারিয়ারগুলো আমাদের সহজ হয়ে যায় কি না তা নিয়ে কথা হয়েছে। এটা যেহেতু রাজনৈতিক আলোচনা। তাই এটির লিগ্যাল বা সাংবিধানিক ইস্যু হিসেবে দেখছি না।
আমরা স্বাভাবিক পরিবেশে নেই। অস্বাভাবিক পরিবেশে আছি। এখন সবকিছু সংবিধান মেনে করতে হবে, সেটা সম্ভব হবে কি না এটা ভাবতে হচ্ছে। এটিকে রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে দেখছি। প্রচেষ্টা হচ্ছে রাজনৈতিক ঐকমত্যের, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্ট করে যারা গণদাবি করছে তাদের জানাতে হবে।
সিদ্ধান্ত নিতে কতদিন লাগতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করবে। তাদের সঙ্গে আমাদের কি ধরনের কথা হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর আশঙ্কার জায়গা কোথায়? সেগুলো আদৌ বাস্তবসম্মত কি না। এটা যে খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে আছি তাও না, আবার বিলম্বিত করাও যাচ্ছে না। কারণ এটা এমন পদ, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে কেউ থাকতে চাইবে না। কারণ গণদাবির বিষয়ে বিলম্বিত করার সুযোগ নেই। কত দিন এটা বলা যায় না।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।
এমওএস/এমআইএইচএস/জেআইএম