ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নিজামীর চূড়ান্ত ফাঁসির রায়ে পাকিস্তানের উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ০৭ মে ২০১৬

১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামির প্রধান মতিউর রহমান নিজামীর চূড়ান্ত ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে একাত্তরের ঘটনার বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বলে মন্তব্য করে বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামির নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যাওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে বিতর্কিত উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বাংলাদেশের বিতর্কিত এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়াও আমরা অনুসরণ করছি।

শনিবার পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে নিজামীর আপিল খারিজ হয়ে যাওয়ায় তার মৃত্যদণ্ড কার্যকরের পথ প্রশস্ত হয়েছে। একমাত্র ক্ষমা প্রার্থনাই তার কাছে বিকল্প হিসেবে আছে। নিজামীর দল তার আপিল খারিজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে।

ডন বলছে, আদালতের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে। অতীতে দণ্ডাদেশ এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পাকিস্তান থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হলে ঢাকা থেকে জোরালো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান যন্ত্রণাদায়ক হয়েছে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গঠিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত চারজন রাজনীতিকের বিচার ও ফাঁসি কার্যকর হয়েছে; এদের অধিকাংশই জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এছাড়া অপর একজন অভিযুক্ত মামলা শুনানিকালে মারা গেছেন।

dawnপাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কথা ঢাকাকে স্মরণ করে দিয়ে বলছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার শেষ করেছিলেন। ১৯৭৪ সালের এপ্রিলের ওই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের সমন্বয় প্রয়োজন।

১৯৭৪ সালের ওই চুক্তি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে নয়াদিল্লিতে স্বাক্ষরিত হয়। এতে বলা হয়েছিল, অনুকম্পা আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার বিচার প্রক্রিয়া চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। ১৫ মার্চ আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরে নিজামীর আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা দেন ২৯ মার্চ।

২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দাযের করা এক মামলায় নিজামীকে আটক করা হয়। পরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জেলে পাঠানো হয়। তখন থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার মানবতাবিরোধী মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয়। ফলে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে।

এসআইএস/আরআইপি

আরও পড়ুন