ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ফেসবুকে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন

বিবস্ত্র করে পুলিশ-চিকিৎসক সেজে মুক্তিপণ দাবি করতেন তারা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৫১ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে প্রতারক চক্রের সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির খিলগাঁও থানা পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির (২৮), আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান (২৬), রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা (৩৫), সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার (৩২), জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম (২০), লিজা (২৫) ও শাহানাজ আক্তার (২০)।

পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, পুলিশ সেজে কিংবা প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে প্রলুদ্ধ করতো। তাদের এসব লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে কেউ ফাঁদে পা দিলে তাকে জিম্মির পর বিবস্ত্র করে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ৯ অক্টোবর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মো. নাসির উদ্দীন নামের একজন ভুক্তভোগী মামলা রুজু করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখেন নাসির উদ্দীন। তিনি ৬ অক্টোবর দুপুরে সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার নামের একজনের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেন চাকরির বিষয়ে। ওইদিন সন্ধ্যায় সীমার কথামতো নাসির খিলগাঁও থানার টেম্পুস্ট্যান্ডের একটি বাসায় যান। কিছুক্ষণ পর সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার ও আনোয়ার ওরফে তন্ময়সহ আরও কয়েকজন ওই বাসায় আসেন।

নাসির উদ্দীন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে বিবস্ত্র করে মারধর শুরু করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন এবং ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার নিজেকে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে নাসিরের মাকে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। নাসিরের মা তৎক্ষণাৎ তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা প্রেরণ করেন। এরপর তারা নাসিরের কাছে থাকা দুটি সোনার আংটি, একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আনোয়ার ওরফে তন্ময় নাসিরের চোখ বেঁধে মোটরসাইকেলে করে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর ফেলে যান।

তালেবুর রহমান আরও বলেন, ৯ অক্টোবর মামলা রুজুর পরপরই নাসিরের দেওয়া তথ্যমতে ওইদিন খিলগাঁও এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির, আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান, রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা, সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার, জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম ও লিজা নামের ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তাধীন মামলায় খিলগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহানাজ আক্তার নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে বা প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে প্রলুদ্ধ করতেন। তাদের এসব লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে কেউ ফাঁদে পা দিলে তাকে জিম্মি করে অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেন। গ্রেফতার নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসিরের নামে হত্যা ও চাঁদাবাজিসহ আটটি মামলা রয়েছে।

টিটি/ইএ/এমএস