এখন পর্যন্ত পূজায় ৪৩টি অপ্রীতিকর ঘটনা, গ্রেফতার ২৬: আইজিপি
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, এবারের দুর্গাপূজায় এখন পর্যন্ত ৪৩টি অপ্রীতিকর ঘটনায় ১৪টি মামলা ও ২৯টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, গত ১ অক্টোবর পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা থেকে সারাদেশে এ পর্যন্ত ৪৩টি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ৪৩ সংখ্যাটি ছোট, তবে এগুলো না হলে আরও খুশি হতাম। এসব ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৪৩টি ঘটনায় ১৪টি মামলা এবং ২৯টি জিডি হয়েছে। এসব ঘটনায় হাতেনাতে ১৮ জনসহ মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পূজা সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের সংবাদ দ্রুত পাচ্ছি। জাতীয় জরুরি সেবা- ৯৯৯, ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। মনিটরিং ব্যবস্থা সব সময় কার্যকরী রয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমে আসা পূজা সংক্রান্ত যে কোনো ঘটনা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। পূজামণ্ডপে ইতোমধ্যে ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে যত ছোট হোক না কেন প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনেরা জানিয়েছেন উল্লেখ করে পুলিশপ্রধান বলেন, এবার তারা যে আশঙ্কা করেছিলেন তার থেকে অনেক ভালোভাবে, অত্যন্ত নিরাপত্তার সঙ্গে পূজা উদযাপন করতে পারছেন। পুলিশসহ সব বাহিনীর উপস্থিতি তাদের আশ্বস্ত করেছে। এ দেশের সব ধর্মের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার বলবৎ করতে চায়।
রাজধানীর পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারে পূজামণ্ডপের ঘটনা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ঘটনার পর থানার ওসিসহ সেখানকার সহকারী পুলিশ কমিশনার, আনসার বাহিনীর সদস্য ও মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকরা অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজন ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে ধরা হয়। তারা মাদকসেবী। এ ঘটনায় যে ছুরিকাঘাত করেছিল সে পলাতক। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাকেও খোঁজা হচ্ছে। আশা করি সেও ধরা পরবেন।
দশমীতে যে রুটে শোভাযাত্রা যাবে এবং যে যে ঘাটে বিসর্জন হবে সেই জায়গাগুলোতে স্পেশাল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিসর্জনের বিভিন্ন রুটে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নাশকতার কোনো আশঙ্কা নেই,যোগ করেন আইজিপি।
যারা অপতৎপরতা চালাতে চায় তারা মুষ্টিমেয় উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা যদি একতাবদ্ধ থাকি এই শঙ্কা কোনো শঙ্কাই না। গতকাল (শুক্রবার) তাঁতিবাজারের ঘটনা তারই প্রমাণ। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যদি অপতৎপরতা চালাতে চান তাকে বা তাদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
পরিবর্তিত সময়ের পর থানায় থানায় গণগ্রেফতারের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি পুলিশের মধ্যে স্থবিরতা কাজ করছে। সেক্ষেত্রে পুলিশের আভিযানিক কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের আইনি কার্যক্রমকে বেগমান করার জন্য বলা হয়েছে, এটাই টার্গেট। যেখানে যারা অপরাধ করবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, কোনো সংবাদ যদি সেনসিটিভ (সংবেদনশীল) হয় তবে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। আপনার পরিচয় গোপন করে জানান, আমরা ব্যবস্থা নেই কি-না দেখেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি, বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিতে যায়।
টিটি/জেএইচ/জেআইএম