ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

মণ্ডপে ইসলামি গান: এবার পূজা পরিষদের সভাপতি-সম্পাদককে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২৪

পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। চট্টগ্রামের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপে ‌ইসলামি গানকাণ্ডে তাদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শচীন্দ্র নাখ বাড়ৈর সই করা এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ইসলামি গানের দলকে পূজামণ্ডপে গানের সুযোগ করে দেওয়ায় পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে পরিষদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রামের জে এম সেন হল প্রাঙ্গণ পূজামণ্ডপে ১০ অক্টোবর আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

পরিষদের সভাপতি বসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বিবৃতিতে বলেন, এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত বেদনাহত। পূজা উদযাপন পরিষদ এ ঘটনা বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি করছে।

এর আগে বিকেলে পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে পরিষদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরীর নেতারা।

বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘সজল দত্ত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহানগর পূজা পরিষদ আয়োজিত সাংস্কৃতিক মঞ্চে চট্টগ্রাম কালচার একাডেমি নামক একটি সংগঠনকে গান করার সুযোগ দেন। ওই সংগঠনের ছয় যুবক মঞ্চে উঠে বাদ্যযন্ত্র ছাড়া উপস্থিত সবার সামনে ইসলামি দাওয়াতি গান পরিবেশন করেন। তারা এ কাজের মাধ্যমে ধর্ম অবমাননা করেন এবং এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। এ ঘটনার জন্য আপনিই দায়ী। তাই সংগঠনের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনাকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।’

এর আগে মহানগর পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের অনুরোধেই গান পরিবেশন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গান পরিবেশনকারী দুজনকে আটক করা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের একটি পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ গাওয়া নিয়ে তীব্র আলোচনা তৈরি হয়। সেই গানের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানান আলোচনায় মাতেন নেটিজেনরা।

মণ্ডপে ইসলামি গান: এবার পূজা পরিষদের সভাপতি-সম্পাদককে অব্যাহতি

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগর পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আহ্বানে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামে একটি সংগঠন ওই পূজামণ্ডপে গান করতে যায়। তবে গান গাওয়ার পরে সনাতন ধর্মের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই গানের দলের ছয় সদস্য গান পরিবেশন করতে মঞ্চে ওঠেন। সংগঠনটি শাহ আবদুল করিমের লেখা বিখ্যাত গান ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’-শীর্ষক গান দুটি পরিবেশন করেন। এর মধ্যে শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান-গানটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত গানের দলটিকে পূজামণ্ডপে নিয়ে এসেছেন। তার উপস্থিতিতেই মঞ্চে উঠে গান পরিবেশ করা হয়। তবে ওই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’

চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামানও দাবি করেছেন, পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই তাদের একটি দল পূজামণ্ডপে গান করতে যায়।

তিনি বলেন, ‘পূজা উদযাপন পরিষদের সজল দত্ত প্রায় ১০ দিন ধরে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। আমাদের কয়েকজন সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেখানে যান। আজ তিনি ফোন করে বলেন- আপনারা একটু আসেন। আপনাদের একটু ফ্লোর (সুযোগ) দেবো। কিছু দেশাত্মবোধাক গান গাইবেন। সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দুটি সম্প্রীতির গান পরিবেশন করে। কিন্তু এ নিয়ে একটা পক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছে যে ষড়যন্ত্র করতেই আমরা গান করতে গিয়েছি। আমরা তো জোরপূর্বক কিছুই করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম।’

এএজেড/কেএসআর/এএসএম