ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ছুটির দিনে স্টিকার লাগানো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান

প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ০৬ মে ২০১৬

ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে স্টিকার লাগানো মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এ নিয়ে ত্যাক্ত-বিরক্ত যাত্রী সাধারণও। বেশ কয়েকটি স্থানে পুলিশ সদস্যদের সাথে বাক-বিতণ্ডাও লক্ষ্য করা গেছে।

বিশেষ করে আইনজীবী, সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী কিংবা পুলিশ লেখা স্টিকার দেখলেই আটকে দেয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্দেশ্যে বসানো চেকপোস্টগুলোতে। বাদ যাচ্ছে না সংসদ সদস্য, তাদের পরিবার, সংসদ সচিবালয় ও সংসদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যানবাহনও। সংসদ কিংবা সচিবালয়ে ব্যবহৃত লেখা স্টিকার লাগানো যানবাহনও চেক করছে ট্রাফিক পুলিশ।

সরেজমিনে রাজধানীর বাড্ডা, মহাখালী, রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ বিজয় স্মরনী এলাকায় দেখা গেছে এ চিত্র।

গত বুধবার ( ৪ এপ্রিল) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সাংবাদিক, আইনজীবী কিংবা পুলিশ নিজ প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী স্টিকার বাদে গাড়িতে আলগা কোনো স্টিকার লাগাতে পারবেন না।

কমিশনার বলেন, আমরা দেখেছি এসব স্টিকার লাগিয়ে অপরাধীরা অপরাধ করছে। পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে সন্ত্রাসীরা বোমাবাজির মতো কাজ করছে। তাই এ ধরনের স্টিকার লাগানো যাবে না। স্টিকার ব্যবহারকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

sticker

তবে যদি সাংবাদিকরা স্টিকার লাগাতে চায় তবে সেই প্রতিষ্ঠান বা মিডিয়ার লোগোসহ পত্রিকা বা চ্যানেলের নাম স্থায়ীভাবে লাগাতে হবে।

পুলিশের এই কর্তা বলেন, গাড়িতে বেআইনিভাবে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করা যাবে না। এই হর্ন ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। এই হর্ন ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে ৪০৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এই হর্ন ব্যবহার বন্ধ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ডিএমপি কমিশনার। মাইক্রোবাসগুলোতে বিল্ট-ইন রঙিন কাঁচ ব্যতীত টিনটেড পেপার লাগানো অস্বচ্ছ স্টিকার লাগানো যাবে না। উল্টো পথে গাড়ি চলাচল ও যত্রতত্র পার্কিং করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান কমিশার।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনার পর থেকে রাজধানীতে আলগা স্টিকার লাগানো জোর অভিযান শুরু হয়েছে। রাজধানীতে যানজটের অন্যতম কারণ ট্রাফিক আইন না মানা।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা লিঙ্ক রোড এলাকায় দেখা যায়, এক ঘন্টায় কয়েক শ’ মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করে তারপর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তাদের দেয়া হচ্ছে মামলা। আবার যাদের গাড়ির কাগজপত্র নেই তাদের যানবাহন ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন এলাকার রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রভাবশালীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হচ্ছে।

পুলিশের স্টিকার লাগানো এক পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেল চেক না করে ছেড়ে দিয়ে অপর এক সাধারণ যাত্রীর মোটরসাইকেল আটকে দেয়ায় দেখা দেয় বিপত্তি। এরই মধ্যে জনৈক সাংবাদিকের মোটরসাইকেলও বেড়িয়ে যেতে দেখা যায়।

sticker

গুলশান শাহজাদপুরের স্থানীয় যুবলীগ নেতা আশরাফ বলেন, আমার গাড়ি আটকে দিয়ে পুলিশের গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। অভিযান শুরুর আগে সতর্কতার জন্য কয়েক দিন সময় দেয়া উচিত ছিল। তাছাড়া যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন তাদের বেলায় ছাড় দেয়া উচিত বলেও জানান তিনি।
 
অপর এক মার্কেটিং কর্মকর্তা বলেন, আজ সারা দিনে কমপক্ষে ৫ জায়গায় দাঁড় করিয়ে চেক করা হয়েছে। এক জায়গায় চেক করার পর কেন আবার নতুন জায়গায় আমাকে দাঁড়াতে হবে। সময় হিসেব করে কাজ করি। বিষয়টি মনে তাদের বিবেচনা করা উচিত।

এ ব্যাপারে ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) খান মো. রেজওয়ান বলেন, অপরাধীরা নিজেদের পরিচয় আড়াল করে অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক, পুলিশ কিংবা আইনজীবী লেখা যানবাহন ব্যবহার করে তারা অপরাধ কাজে অংশ নিচ্ছে। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের বিশেষ অভিযান চলছে। তবে নিরাপরাধ মানুষ ও যানবাহন আরোহীরা যেন হয়রানির শিকার না হন সে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

জেইউ/এসএইচএস/এমএস