ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

হিযবুত তাহরীর কোনো কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই: আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৯:৩৪ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হিযবুত তাহরীরকে জঙ্গি সংগঠন উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, এ সংগঠনের কোনো কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই। যেখানেই তাদের পাওয়া যাবে, আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের অভিযোগে আগে যারা কারাগারে ছিল, তাদের মধ্যে যারা জামিনে বেরিয়েছে, তারা যদি পুনরায় জঙ্গিবাদে জড়ানোর চেষ্টা করে, তাহলে আইনের আওতায় আনা হবে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে সিএমপি কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, থানায় মামলা না নিলে বাদী আদালতে যাচ্ছেন। আদালত বাদীর অভিযোগ এফআইআর হিসেবে নিতে নির্দেশনা দিচ্ছেন। এতে মামলা হয়ে যাচ্ছে। এতে অনেক নিরপরাধ মানুষও মামলার আসামি হয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত যত মামলা হয়েছে, তাতে সাংবাদিকের চেয়ে পুলিশই বেশি আসামি হয়েছে। এসব মামলার দায়ভার বাদীর। তবে যেভাবে মামলা হচ্ছে, সেভাবে ঢালাও মামলা হলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটে।

তিনি বলেন, মামলায় আসামি হলেই তাকে গ্রেফতার করতে আইনে এমন বিধান নেই। এজন্য অপরাধে জড়িত না থাকলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আগে-পরে যত মামলা হয়েছে, সবগুলোই পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি মামলার এজাহার সংগ্রহ করা হচ্ছে। মামলার আসামি হলেও নিরীহ লোকজন যেন হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষভাবে অপরাধে জড়িত না থাকলে কোনো সাংবাদিককে হয়রানি কিংবা গ্রেফতার করা হবে না।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত সময়ে যথেচ্ছভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। যিনি অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য নন তাকেও অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। ৫ আগস্টের পর বিগত সময়ে লাইসেন্স দেওয়া প্রত্যেক অস্ত্র থানায় জমা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। গত ৩ সেপ্টেম্বর লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমার সেই সময় শেষ হয়েছে। এখন লাইসেন্স পাওয়া সেই অস্ত্রগুলোও অবৈধ।

মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, এখন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। এখানে তিন ধরনের অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে গত ৫ আগস্ট থানায় হামলার সময় যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে, যেসব বৈধ লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নির্ধারিত সময়ে থানায় জমা দেননি এবং এমনিতেই যেসব অবৈধ অস্ত্র রয়েছে, সব উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। অবৈধ অস্ত্র যার কাছেই পাওয়া যাবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে আইজিপি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অসংখ্য প্রাণহানি হয়েছে। পুলিশের ৪৪ জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এবং পরবর্তী সময়ে যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে, প্রত্যেক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মব জাস্টিসের নামে কারও গায়ে হাত না তোলার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে মব জাস্টিসের নামে কিছু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা মব জাস্টিসের নামে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, চট্টগ্রামে যারা গান গাইতে গাইতে যুবককে হত্যা করেছে, প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মব জাস্টিসও এক ধরনের অপরাধ। মব জাস্টিস করলেও জড়িতদের আইনের আওতায় আসতে হবে।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা চলছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা চলছে। গুজব রটিয়ে বিভিন্ন ঘটনা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ। দেশের কোথাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার সুযোগ নেই। এ দেশ মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার। এ দেশ প্রত্যেক বাংলাদেশির। এখানে সবার সমান অধিকার। পুলিশ আইনি কাঠামোতেই সব সাম্প্রদায়িক অপতৎপরতা রুখে দিতে চায়। সনাতন ধর্মালম্বী ভাইবোনেরা যেন আগামী দুর্গোৎসব উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে পালন করতে পারে, সেজন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

৯৯৯ পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯ পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে। পুলিশের অন্যান্য টুলস, অ্যাপস, হটলাইনগুলো চালু হয়েছে। জনগণ এগুলোর মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করতে পারছে।

এমডিআইএইচ/ইএ/জেআইএম