ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং ও কাল্বকে ঘিরে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৪:১৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দ্য মেট্রোপলিটান খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি নিয়ে একটি চিহ্নিত চক্রের গভীর চক্রান্তের অভিযোগ করেছে সংগঠনটির পরিচালকরা। একই প্রক্রিয়ায় দেশের সব খ্রিস্টান ক্রেডিট ইউনিয়নের সমন্বয়কারী সংস্থা দ্য কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ (কাল্ব) ঘিরেও ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন বক্তারা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মনিপুরীপাড়ায় আর্চবিশপ মাইকেল ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন দ্য কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ (কালব) এবং দ্য মেট্রোপলিটান খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান আগস্টিন পিউরীফিকেশন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ফাদার তপন ডি’রোজারিও, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান পরিষদের সভাপতি মি. নির্মল রোজারিও, হাউজিং সোসাইটির সেক্রেটারি মি. ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল, কাল্বের সেক্রেটারি আতিকুল্লাহ সরকার, কাল্বের ট্রেজারার নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ, ব্রিগেডিয়ার (অব.) ডা. ব্রায়েন, মি. প্রভাত ডি’রোজারিও।

সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আগস্টিন পিউরীফিকেশন বলেন, ‘কাল্বের সাবেক বোর্ডের কিছু অসাধু পরিচালক দায়িত্ব পালনকালে স্থাপনা নির্মাণ এবং উন্নয়নমূলক কর্মকা-পরিচালনার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট করেছেন। সাধারণ সদস্যদের দাবির মুখে বর্তমান কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে। ওই চক্রের কেউ কেউ বতর্মান কমিটিতেও ছিলেন। অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হলে; তারা পদত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যান। তদন্তে সাবেক কমিটির জমি ক্রয় এবং কাল্ব রিসোর্টে বার অনুমোদনের লাইসেন্স বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ ধরা পড়ে। ওই চক্রটি পুনরায় কাল্বকে গ্রাস করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের প্ররোচনায় প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে অসত্য, বানোয়াট সম্মানহানিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

চেয়ারম্যান আগস্টিন পিউরীফিকেশন জানান, আগের নির্বাহী বোর্ডের বেপরোয়া লুটপাটের কারণে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কাল্ব-এর মোট লোকসান ছিল ৩৮ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরের অর্থবছরে তা ৪৬ কোটি ৮৪ লাখ ৬১ হাজার টাকায় দাঁড়ায়। ওই অবস্থায় ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে। তখন কাল্বের মূলধন ছিল ১০৪০ কোটির কিছু ওপরে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ১২৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এ সময় লোকসান কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আগামী অর্থবছরের লোকসান কাটিয়ে সদস্যদের লভ্যাংশ দিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে বর্তমান কমিটি।

তিনি বলেন, সংগঠনের প্রধান কার্যালয় ‘কাল্ব টাওয়ার’ নির্মাণের জন্য ভাটাড়ার মাদানী রোডে ১৩.৯৭৫ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রারম্ভিক কাজ শুরু হয়েছে। ঋণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাল্ব রিসোর্ট এন্ড কনভেনশন হলকে লাভজনক করার পাশাপাশি আবাসন শিল্পে বিনিয়োগের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে আবাসন প্রকল্পের উপযোগী জমি ক্রয় করা হয়েছে।

দ্য মেট্রোপলিটান খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি সম্পর্কে আগস্টিন পিউরীফিকেশন বলেন, বর্তমান কমিটি হাউজিং সোসাইটির দায়িত্ব গ্রহণের সময় সম্পদ-পরিসম্পদ ছিল ২২২ কোটি টাকা। বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকায়। আর সোসাইটির মূলধন দৃশ্যমান আয়মূলক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে। ১২টি ফ্ল্যাট প্রকল্প থেকে এখন ২০৩টি ফ্ল্যাট প্রকল্পে উন্নীত করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ৪০টি বিল্ডিং নির্মাণের পাশাপাশি আরো ১৯টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ২৭৭ বিঘা জমি প্রকল্প থেকে এখন এক হাজার বিঘায় উন্নীত করা হয়েছে। ৭৭টি প্লট প্রকল্পকে বর্তমান কমিটি ৪৪৯০টি প্লটে রূপান্তরিত করেছে। এছাড়া সদস্যদের আবাসন ও আয়মূলক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কাল্ব এবং হাউজিং সোসাইটি যখন উন্নতির শিখরে আরোহনের চেষ্টা চালাচ্ছে; ঠিক তখন ওই চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ চক্র নিজেদের অপকর্ম ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশেষ করে দুই প্রতিষ্ঠানের চেয়াম্যান হিসেবে আমাকে এবং প্রতিষ্ঠান জড়িয়ে নানা মিথ্যার পসরা সাজিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা করছে। আমাকে ব্যক্তিগতভাবেও অপদস্ত করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

আগস্টিন পিউরীফিকেশন বলেন, হাউজিং সোসাইটির সকল প্রকার কার্যক্রম সমবায় আইন ও উপবিধি যথাযথভাবে মেনে বার্ষিক অডিট ও বার্ষিক সাধারণ সভা পরিচালিত হয়। এই প্রতিষ্ঠান কারও ব্যক্তিগত কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরাই এর মালিক। প্রতিষ্ঠানে খ্রিস্টান সদস্য ছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর কোনো ব্যক্তির এখানে অর্থ গচ্ছিত রাখার বিধি-বিধান নেই। সম্প্রতি প্রাক্তন একজন মন্ত্রীকে ঘিরে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা হয়। ওই ব্যক্তির কোনো অর্থ বা সম্পদ এই প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত রাখার কোনো সুযোগ নাই। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের কোনোপ্রকার অবৈধ সম্পদও নাই।’

এমআরএম/জেআইএম