বিপর্যয় কাটাতে কানাডার বিনিয়োগ চান ড. ইউনূস
অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য কানাডাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস বুধবার (২৮ আগস্ট) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস সে দেশের (কানাডার) শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং উন্নয়ন সংস্থাসহ কানাডার সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে তার সরকারের কানাডার সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তার গল্প কানাডার স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের বড় বিনিয়োগ দরকার, অন্তর্বর্তী সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে একটি অর্থনীতি পেয়েছে, যেটি বিপুল পরিমাণ ঋণের ভারে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো অর্থনীতি ঠিক করা।
- আরও পড়ুন
- ব্যাংক লুটের হিসাব কষছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
- পাচার অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চান প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, সরকার পূর্ববর্তী শাসনামলে ভেঙে পড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুদ্ধার করছে এবং শাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে।
এসময় কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস বলেন, তার সরকার প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। কানাডা বাংলাদেশে সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকার দেশ থেকে বাণিজ্য পছন্দ অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে অবশ্যই কারখানায় শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পোশাক ক্রয়কারী ব্র্যান্ডের উদ্বেগের সমাধানের জন্য তার সরকার ‘আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) মানদণ্ডের সঙ্গে সমানভাবে শ্রমিকদের অধিকার বজায় রাখবে।
লিলি নিকোলস আরও বলেন, কানাডা গত জুলাই ও আগস্টে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সহায়তা করতেও আগ্রহী।
ছাত্রদের নেতৃত্বে বিপ্লব দেশের জন্য নতুন আশার সূচনা করেছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এটি ঐতিহাসিক সুযোগ। এ সুযোগ হয়তো কখনোই ফিরে আসবে না।
তিনি বলেন, দেশ ভোটে যাওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংস্কার করা হবে। বিগত সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী কারচুপির কমিশনে পরিণত করা হয়েছিল।
কানাডিয়ান হাইকমিশনার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, কানাডা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অবদান রেখেছে এবং রোহিঙ্গা জনগণের জন্য জীবিকার সুযোগ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উপচেপড়া ভিড় কমানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গা তরুণদের আশা জাগানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
এসইউজে/এমকেআর/জিকেএস