ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সোহেল তাজ

ভুল-ত্রুটি নিয়ে আত্মোপলব্ধিও করছে না একটা রাজনৈতিক দল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:২৩ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২৪

‘একটা রাজনৈতিক দল তার কোনো ভুল-ত্রুটি নিয়ে অনুশোচনা তো দূরের কথা, কোনো আত্মসমালোচনা বা আত্মোপলব্ধিও করছে না’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।

মঙ্গলবার (২৭) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ছাত্রদের ওপর আনসার সদস্যদের হামলা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ছবি যুক্ত করে এই মন্তব্য করেন সোহেল তাজ।

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ তার ফেসবুকে লেখেন, ‘কতিপয় আনসার বাহিনীর নামধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা ছাত্রদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং হাসনাত আব্দুল্লাহসহ আহত সকল ছাত্রদের জন্য সমবেদনা জানাই। ন্যাক্কারজনকভাবে বার বার চেষ্টা চলছে ছাত্র/জনতার শত শত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত নতুন পথের যাত্রা থেকে আবার বাংলাদেশকে অন্ধকারে নিয়ে যাওয়ার। প্রথমে ডিজিটাল জুডিশিয়াল কুয়ের চেষ্টা। তারপর বাঁধ ছেড়ে বাংলাদেশকে ডোবানোর চেষ্টা আর এখন এইটা।’

কোনো রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ না করে সোহেল তাজ লেখেন, ‘আমি লক্ষ্য করছি যে একটা রাজনৈতিক দল তার কোন ভুল ত্রুটি নিয়ে অনুশোচনাতো দূরের কথা কিন্তু কোন আত্মসমালোচনা বা আত্মোপলব্ধিও করছে না। এটা ভালো লক্ষণ না এবং কোনোদিনই সুফল আনবে না বরং আরো ধ্বংস নিয়ে আসবে।’

এই পোস্টের পর একের পর এক মন্তব্য করতে থাকেন নেটিজেনরা। মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সোহেল তাজ ‘বিঃ দ্রঃ’ লিখে আরো একটি অনুচ্ছেদে লেখেন, ‘আপনারা যারা কমেন্ট করছেন যে আমি আমার নীতি এবং আদর্শ থেকে সরে গিয়েছি তাদেরকে বলব যে সেই আদর্শ/নীতি যদি হয় হত্যা গুম খুন নির্যাতনের, জনগণের ভোটের অধিকারসহ মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করার, দুর্নীতি করে লক্ষ্য লক্ষ্য কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করার, রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার, তাহলে ঠিকই বলেছেন এই নীতি/আদর্শ আমার না।’

সোহেল তাজ ২০০১ সালের নির্বাচনে গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান সোহেল তাজ। একই বছরের ৩১ মে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল সংসদ সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করেন সোহেল তাজ। তখন এটি গ্রহণ না করলে ওই বছরের ৭ জুলাই তিনি আবার পদত্যাগপত্র পেশ করেন। তখন তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চাকরি জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে আনসার সদস্যরা কয়েক দিন ধরে ঢাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। রোববার (২৫ আগস্ট) তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সচিবালয় ঘেরাও করে রাখেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান।

ঘেরাও করে রাখায় সচিবালয় থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছিলেন না। দিনভর রাজধানীতে ছিল ব্যাপক যানজট।

সচিবালয়ে আনসার সদস্যরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেককে আটকে রাখেন। রাতে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৭০ জন আহত হন। এর মধ্যে পাঁচজন আনসার সদস্য। এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তিন থানায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। মামলা অজ্ঞাতনামাসহ ১০ হাজার আনসার সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। তিন মামলায় সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত ৩৬৯ জন আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এমএমএআর/জিকেএস