৩৭ দিন পর মেট্রোরেল চলাচল শুরু
টানা এক মাস সাতদিন পর চালু হলো বন্ধ থাকা গণপরিবহন মেট্রোরেল। আজ রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এ দুটি স্টেশন সংস্কারের পর চালু করতে আরও এক বছর সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর গত ১৮ জুলাই কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকে মেট্রোরেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এখন এ দুটি স্টেশন বাদ দিয়ে অন্যান্য স্টেশন থেকে যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
তবে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এবং সকাল ৭টা ২০ মিনিটে উত্তরার উত্তর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া মেট্রো ট্রেন দুটিতে শুধু এমআরটি বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াত করা যাবে। রাত ৯টা ১৩ মিনিটের পর মতিঝিল স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া মেট্রো ট্রেনে শুধু এমআরটি বা র্যাপিড পাস দিয়ে যাতায়াত করা যাবে। মেট্রো স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ২০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সিঙ্গেল জার্নি টিকিট ক্রয় করা যাবে। একই সঙ্গে এমআরটি পাস ক্রয় এবং এমআরটি বা র্যাপিড পাস আপ টু আপ করা যাবে। রাত ৮টা ৫০ মিনিটের পর মেট্রো রেল স্টেশনের সব টিকিট অফিস ও টিকিট বিক্রি মেশিন বন্ধ হয়ে যাবে। মেট্রোরেলের সাপ্তাহিক বন্ধ শুক্রবার।
মেট্রোরেল চালু নিয়ে গত এক মাস ধরে যা ঘটেছে:
নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত ১১ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ আগস্ট থেকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করবে। তবে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে আপাতত ট্রেন থামবে না। কারণ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় এ দুটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবশ্য এরপর ১৫ আগস্ট ডিএমটিসিএল সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চালু সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়। এতে বলা হয়, অনিবার্য কারণে প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো শুরু করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন
- টুকু-নীরবের নির্দেশে মেট্রোরেলে হামলার সমন্বয় করেন ছাত্রদল নেতা
- মেট্রোরেলে তাণ্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াত, ক্ষতি ৩০০ কোটি
- মেট্রোরেল চালুর খবর নেই, যাতায়াতে সেই আগের ভোগান্তি
যদিও ডিএমটিসিএলের সূত্রে জানা গেছে, লাইন, কোচ ও সংকেতব্যবস্থা-মেট্রোরেলের সবই ঠিক আছে। এরপরও মেট্রোরেল চালু না হওয়ার কারণ ছিল নিচের দিকের কর্মীদের কর্মবিরতি। বড় কর্মকর্তারা বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন, এমন অভিযোগ এনে কর্মবিরতিতে যান মেট্রোরেলের কর্মচারীরা। এ জন্যই কারিগরি কোনো সমস্যা না থাকার পরও মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পরে ১৮ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান সাত দিনের মধ্যে মেট্রোরেল চলাচল শুরুর আশ্বাস দেন। মেট্রোরেলের কর্মচারীরা ২০ আগস্ট থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এমএমএ/এসএনআর/এমএস