পুলিশ যেন আর দলীয় বাহিনীতে পরিণত না হয়: বদিউল আলম মজুমদার
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের একটি কর্মপরিকল্পনা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় তাদের এখন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় করণীয় আছে। তারা কী করবেন, তারা একটা ভিশন দিলে ভালো হয়। এ ক্ষেত্রে কর্মপরিকল্পনা দিলে সবচেয়ে ভালো। তাহলে আমরা কোন ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করতে পারবো তা বুঝতে পারবো।’
বুধবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে এক হোটেলে আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টদের স্বাগত জানিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হয়েছে, তারা কাজ করছেন। এ উপদেষ্টা পরিষদকে সফল হতে হবে। তার কোনো বিকল্প নেই। তাদের ব্যর্থতা মানে আমাদের সবার ব্যর্থতা। তাই আমাদের অবস্থান থেকে তাদের সহযোগিতা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন যে দাবি উঠছে তিন মাস বা ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের। তা হলে কর্মপরিকল্পনা হবে একরকম। আর যদি তার চেয়ে বেশি সময় হয় তাহলে ভিন্ন বিষয়।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম কাজটি হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা। নাগরিকদের জীবন এবং সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এজন্য আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি চ্যালেঞ্জ হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আগের সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন যারা তারা ঘাপটি মেরে আছেন। অথচ অতীতের সরকার যে অপকর্মগুলো করেছে তারা তার প্রশ্রয় দিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দলীয় বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারে ভেঙে পড়েছিল জানিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সরকার পতনের পর অনেকে পালিয়ে গেছেন। অনেকে আবার গ্রেফতার হয়েছেন। কেউ কেউ আবার ক্যান্টনমেন্টে হেফাজতে আছেন। আমি জানি না তারা কীভাবে হেফাজতে আছেন। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যখন ডিবি অফিসে হেফাজতে ছিলেন তখন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম- এটা কোন ধরনের হেফাজত। যারা হেফাজতে আছে তাদের তালিকা করা দরকার, আমাদের জানা দরকার। আইনগত অনেক বাধ্যবাধকতা আছে। তাদের যদি গ্রেফতার দেখানো হয়, তা হলে তাদেরকে আদালতে হাজির করা দরকার। এসব ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সদস্য সুবিধা নিয়েছেন তারা তিন ধরনের অন্যায় করেছেন। একটা হল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ। তারা অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছেন। হাজারও ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এটা অনেকেই বলেন মানবতাবিরোধী অপরাধ।’
‘এ ছাড়া তারা আবার অনেক ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। মানুষের অধিকার হরণ করেছেন। বিভিন্নভাবে মানুষকে হয়রানি করেছেন। এরও বিচার হওয়া দরকার। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক যে অপরাধ- ব্যাংক লুট, দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে। এই তদন্ত যাতে নিরপেক্ষ হয়, যারা দায়ী হবেন তাদের যেন সঠিক বিচার করা হয়। বিচারের মাধ্যমে আমাদের নতুন সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। এভাবে এই দলীয় বাহিনীকে সরকারি বাহিনীতে পরিণত করতে হবে। এটি চাট্টিখানি বিষয় নয়। যদিও অনেকে পদায়ন করা হয়েছেন। এটা অনেক সময় লাগবে, তবে এটা এখনই শুরু করা দরকার। নিশ্চিত করতে হবে তারা যেন আবার দলীয় বাহিনীতে পরিণত না হয়। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ যেন তারা রক্ষা না করে’, যোগ করেন সুজন সম্পাদক।
এমএমএ/কেএসআর/জিকেএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ‘গণঅভ্যুত্থানে আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না, রাষ্ট্র কি ঘুমিয়ে আছে?’
- ২ পর্তুগালে ইউএনএওসি গ্লোবাল ফোরামে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ৩ এলডিসি দেশগুলোকে ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে সমর্থন চাইলো বাংলাদেশ
- ৪ চট্টগ্রামে বিদেশি পিস্তলসহ ৩ কারবারি গ্রেফতার
- ৫ ৪ ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু