ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘লাল’ প্রোফাইলে সয়লাব ফেসবুক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ১০:৩২ এএম, ৩০ জুলাই ২০২৪

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘোষিত ‘চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি অনলাইনে প্রচার’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফেসবুক সয়লাব হয়েছে লাল রঙের প্রোফাইল ফটোতে।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত ফেসবুকের বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রোফাইল, গ্রুপ ও পেইজ ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

প্রোফাইলে লাল ছবি দেওয়ার পাশাপাশি অনেককে চোখে ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে একক ও দলীয় ছবিও দিতে দেখা গেছে।

লাল কাপড় বাঁধার কারণ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “সরকার দেশব্যাপী গণহত্যা চালিয়ে তারপর ছাত্রদের আন্দোলনকে ‘সহিংসতা’ হিসেবে উল্লেখ করে নিহতদের স্মরণে শোক দিবস ঘোষণা করে নিহত শহীদদের সঙ্গে তামাশা করেছে। এর প্রতিবাদে আমরা তাদের কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচিকে বয়কট করেছি। এখনো তাদের হাতে রক্ত লেগে আছে। তাই আমাদের কর্মসূচি লাল কাপড় মুখ ও চোখে বেঁধে অনলাইন ক্যাম্পেইন করা।”

এর আগে চোখে ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপকভাবে প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের একাংশ। সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে এক বিবৃতির মাধ্যমে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ হেফাজতের বাইরে থাকা সমন্বয়করা। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকারের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচির বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, নোয়াখালী, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, যশোর, ঠাকুরগাঁওসহ সারাদেশব্যাপী আজকের (সোমবারের) কর্মসূচি বিক্ষোভ ও ছাত্রসমাবেশ সফল করার জন্য আমরা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবিগুলোর সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও গণমানুষের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।

সমন্বয়করা বলেন, বর্তমান সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নিয়ে প্রতিদিনই নির্মমভাবে শিক্ষার্থীদের দমন-নিপীড়ন ও মানুষের জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় প্রচার করছে এবং মিডিয়ার সামনে দেওয়া সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মায়াকান্না প্রচার করছে।

তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে আপনারা মঙ্গলবারের কর্মসূচি সফলে সহযোগিতা করুন। আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, ছাত্রসমাজের বুকে গুলি চালিয়ে বাংলার ইতিহাসে কোনো আন্দোলন দমন করা যায়নি। অবিলম্বে ছাত্রসমাজের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে দেশকে স্থিতিশীল করুন।

এর আগে গত রোববার (২৮ জুলাই) রাতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আলোচনা শেষে এক ভিডিও বার্তায় সব আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময় আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।

ভিডিও বার্তায় নাহিদ ইসলাম বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সুষ্ঠু-তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা এরই মধ্যে পূরণ করেছে সরকার। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। এ মুহূর্ত থেকে আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।

এমএইচএ/এমএইচআর/এমএমএআর/জেআইএম