সেতু ভবনে অস্থায়ী অফিসে চলছে ইন্টারনেট সংযোগের কাজ
আগুনে পুড়ে বীভৎস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেতু ভবন। ১২ তলা ভবনটির ছয় তলা পর্যন্ত দুষ্কৃতকারীদের আগুনে পুড়ে গেছে। ভবনের নিচে পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া সারি সারি গাড়ি। কোনো কর্মকর্তার গাড়ি কোনটি দেখে বুঝার উপায় নেই। এখন ভবনের সামনে বাইরে তাঁবু টানিয়ে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী অফিস। সেই অস্থায়ী অফিসে চলছে ইন্টারনেট সংযোগ চালুর কাজ।
শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুর ২টায় সেতু ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের সামনে সারি সারি পোড়া গাড়ির মাঝেই তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী অফিস স্থাপন করা হয়েছে। ভবনের পশ্চিমাংশে চলছে ইন্টারনেট সংযোগ চালুর কাজ।
সেখানে কথা হলে ইন্টারনেট সংযোগ কাজের তত্ত্বাবধানে থাকা সেতু বিভাগের প্রোগ্রামার সৈয়দা ফিরোজা ফরহাদ জাগো নিউজকে বলেন, রোববার সকাল থেকে অস্থায়ী অফিস চালু হবে। ইন্টারনেট সংযোগ চালুর কাজ চলছে। ইন্টারনেট ছাড়াতো অফিস চলে না।
আগুনে সেতু ভবনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সে বিষয়ে অবগত নন বলে জানান সৈয়দা ফিরোজা ফরহাদ।
আরও পড়ুন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেতু বিভাগের একজন কর্মী জানান, গাড়িগুলো এমনভাবে পুড়েছে রেজিস্ট্রেশন নম্বরও দেখা যায় না। ভবনের নিচতলায় পড়ে আছে গ্লাসের খন্ডিতাংশ, ইলেকট্রিক ও টেলিফোন লাইন। ডে কেয়ার সেন্টারের আসবাবপত্রসহ অনেক যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে। ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে কাচের টুকরো, দেয়ালের পলেস্তারাসহ ইলেকট্রিক ক্যাবল পড়ে আছে।
এছাড়া দ্বিতীয় তলায় থাকা স্টোর, প্রোগ্রামার, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কক্ষ এবং অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অনুবিভাগের কক্ষ ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। একই অবস্থা তিনতলায়ও। এ ফ্লোরে থাকা সব কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ১২ তলা সেতু ভবনটির পুরোটিতে আগুনের ছোঁয়া লেগেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরো ভবন। বিশেষ করে তিনতলা পর্যন্ত সব কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর তিন-ছয় তলা পর্যন্ত বিভিন্ন কক্ষের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, এ ঘটনায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রশিদুল হাছানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটির প্রতিবেদন পেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
এর আগে শনিবার সকালে সেতু ভবন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তার সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সেতু ভবনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুনে সেতু কর্তৃপক্ষের ৫৫টি গাড়ি, এসি, কম্পিউটার, ইলেকট্রনিক লাইনসহ আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। বাদ যায়নি ক্যান্টিন, আনসার ক্যাম্প, ড্রাইভারদের বিশ্রামাগার। সেতু ভবন এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ।
এমএমএ/এমএএইচ/এএসএম