ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

তাদের দাবির চেয়ে বেশি দিয়েছি, তারপরও কেন দুর্বৃত্তদের সুযোগ দিলো

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৫১ এএম, ২৫ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে দাবি তারা করেছিল কোটা সংস্কারে, যতটুকু চেয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি দিয়েছি। যখন তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো, তারপরেও তারা এই জঙ্গিদের সুযোগ করে দিলো কেন?’

বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এডিটরস গিল্ডসের উদ্যোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, হেড অব নিউজ এবং সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। এই যে লোক চলে আসা, এবার আমরা কিন্তু আগে থেকে খবর পেয়েছি লোক ঢুকবে। গোয়েন্দা দিয়ে সব হোটেল, কোথায় থাকতে পারে সেগুলো কিন্তু নজরদারিতে আনা হয়েছে। কিন্তু ওরা সেখানে ছিল না; ওরা চলে এসেছে ঢাকার ঠিক বাইরের পেরিফেরিতে (সংলগ্ন এলাকায়)।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমস্ত বাংলাদেশ থেকে শিবির-জামায়াত এরা কিন্তু এসেছে। একই সঙ্গে কিন্তু ছাত্রদলের ক্যাডাররাও সক্রিয় ছিল। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে এরাও (বিএনপি) কিন্তু সক্রিয় ছিল।’

আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস খেয়াল করবেন তখনো কিন্তু লাশ পড়েনি। কিন্তু স্টেট ডিপার্টমেন্টের (যুক্তরাষ্ট্রের) বক্তব্যে এসে গেলো যে লাশ পড়েছে। তো লাশের খবর তাদের কে দিলো? তাহলে লাশ ফেলার নির্দেশটা কে দিয়েছে? এটাও খবর নেওয়া দরকার। তারপরে কিন্তু লাশ পড়তে শুরু করলো।’

তিনি বলেন, ‘তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) এভাবে কেন সুযোগটা সৃষ্টি করে দিলো সেই জবাবটাও জাতির কাছে তাদের দিতে হবে। আমরা তো বার বার তাদের সঙ্গে বসলাম। প্রজ্ঞাপন, সেটাও করা হলো। তাদের কোনো দাবিতো পূরণ করা ছাড়া (বাদ) রাখিনি।’

আন্দোলনকারীদের একদিন জাতির কাছে জবাব দিতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে দাবি তারা করেছিল কোটা সংস্কারে, যতটুকু চেয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি দিয়েছি। যখন তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো, তারপরেও তারা এই জঙ্গিদের সুযোগ করে দিলো কেন? কোটা আন্দোলনকারীদের কিন্তু জাতির কাছে একদিন এই জবাব দিতে হবে। কেন মানুষের এত বড় সর্বনাশ করার সুযোগ করে দিলো?’

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিষয়ে সরকারের সহানুভূতিশীল মনোভাবের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সব সময় তাদের সঙ্গে সহানুভূতি দেখিয়েছি। তাদেরকে সব সময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যেসব ঘটনা ঘটেছে এটা কখনো ক্ষমা করা যায় না।’

দেশবাসীকে সব ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ, পোশাক তৈরি করা হলো কালো প্যান্ট, সাদা শার্ট; ফলস (ভুয়া) আইডি কার্ড, পেছনে ব্যাগের মধ্যে কি আছে? পাথর আর ধারালো অস্ত্র। মসজিদে অস্ত্র নিয়ে ইমামকে মাইকিং করতে বাধ্য করা, এই যে জঙ্গিবাদের একটা বিভৎস চেহারা আজ সবার সামনে চলে আসলো এটার বিরুদ্ধে জাতিকে, সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে অনুরোধ করবো, যারা এ ধরনের দেশের সর্বনাশটা করলো, যারা আজ গণমানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধি, তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য, তাদের জীবনমান উন্নত করার জন্য যতগুলো স্থাপনা তৈরি করেছি সবগুলোতেই তারা আঘাত করেছে, সবগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘(এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে) ক্ষতিটা কার? নিশ্চয়ই জনগণের। এখানে তো জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে, এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে। কারণ এরা তো কোনোদিনই কোনো দেশে ভালো কিছু করতে পারেনি।’

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন এডিটরস গিল্ডস প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল হক বাবু।

এসইউজে/কেএসআর/এমআইএইচএস