ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

৩ দাবিতে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ১২:৫০ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৪

৫ শতাংশ আদিবাসী কোটা সংরক্ষণসহ ৩ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ’।

রোববার (১৪ জুলাই) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক অলিক মৃ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমতল এবং পার্বত্যাঞ্চলে প্রায় ৫৪টির অধিক ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ৪০ লাখের অধিক মানুষ বসবাস করছে। ঐতিহাসিকভাবে এ জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা নানান বঞ্চনা ও প্রান্তিকতার শিকার। আর্থ-সামাজিক ভঙ্গুরতা ও রাষ্ট্রের নানা বৈষম্যমূলক নীতির কারণে তারা গুণগত শিক্ষাসহ সুবিধা ও অধিকার হতে বঞ্চিত। পার্বত্যাঞ্চলে আদিবাসী পাড়া বা ঘরবাড়ি থেকে তাদের স্কুলগুলো দূরবর্তী জায়গায় অবস্থিত। সেখানে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় এবং পর্যাপ্ত ও যোগ্য শিক্ষকের অভাবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গুণগত শিক্ষা ও ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারে না। অন্যদিকে তাদের ভাষা, শিল্প, সাহিত্য, বিশ্বাস, রীতি, প্রথা ও সামগ্রিক ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতি পরিমণ্ডলটাই মূল ধারার বাঙালি জনগোষ্ঠী থেকে ভিন্ন। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় হলো- এই ভিন্নতাকে সম্মান ও স্বীকৃতি দিয়ে তাদের স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের ভাষা ও সাহিত্য উন্নয়নের কোনো উদ্যোগ এই রাষ্ট্র ব্যবস্থার গোড়া থেকেই আমরা লক্ষ্য করিনি।

তিনি আরও বলেন, কোটা একটি সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্রে বিদ্যমান বিভিন্ন নীতিমালা ও আইন বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসীদের জীবনমান রক্ষা, অধিকার সুরক্ষা ও বিকাশে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি। বরং তাদের ওপর নিপীড়ন ও বঞ্চনার মাত্রা বাড়িয়েছে। সংবিধানে দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুযোগের কথা বলা হয়েছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের সময় ‘সম্পূর্ণভাবে কোটা তুলে দেওয়া হলেও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরিতে বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে’ বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা সে কথার প্রতিফলন দেখতে পাইনি।

অলিক মৃ বলেন, কোটা বাতিল হওয়ার আগে পর্যন্ত ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮ ও ৩৯তম (বিশেষ) বিসিএস পরীক্ষায় মাত্র ১৫৭ জন আদিবাসী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিল। ২০১৮ সালের কোটা বাতিল হওয়ার পর তাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সংখ্যা খুবই কম। পিএসসির তথ্যমতে, ৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় ৯২ জন আদিবাসী উত্তীর্ণ হলেও মাত্র ৪ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদের অংশগ্রহণ থাকবে না এবং দিন দিন তারা আরও প্রান্তিকতায় পর্যবসিত হবে। তাদের জন্য কোটা বরাদ্দ থাকলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায় তারাও সমান পাস নম্বর পেয়ে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকে। ফলে আদিবাসী শিক্ষার্থীরাও মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। তাই তাদের অমেধাবী বলাটা অযৌক্তিক, অবান্তর এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।

সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের নিকট ৩টি দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। দাবিগুলো হলো-

১. ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।
২. পুনর্বহালকৃত কোটা পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য আদিবাসী জাতিসমূহের মধ্যে অনগ্রসর ও অধিকতর অনগ্রসর জাতিসমূহকে চিহ্নিত করতে হবে। ৫ শতাংশ কোটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিকতর অনগ্রসর জাতিসমূহকে এ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৩.আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত, শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে

এমএইচএ/এমএইচআর/এমএস