ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

অ্যাপের চেয়ে ‘খ্যাপে’ খুশি রাইডাররা

তৌহিদুজ্জামান তন্ময় | প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, ১২ জুলাই ২০২৪

ঢাকার যানজট ও গণপরিবহনে নৈরাজ্যের কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল রাইড শেয়ারিং। অল্প সময়ের মধ্যেই সেই রাইড শেয়ারিংই এখন ভোগান্তির কারণ। অ্যাপ ব্যবহারে ব্যাপক অনীহা রাইডারদের। বাড়ছে ভাড়ায় বা ‘খ্যাপে’ রাইড। এতে ঘটছে হত্যার মতো ঘটনাও। অতিরিক্ত ভাড়া, ডিজিটাল পেমেন্টে রাজি না হওয়া ও যাত্রী হয়রানি তো আছেই। এসব ইস্যুতে একে অপরকে দুষছেন চালক, যাত্রী ও প্রতিষ্ঠান।

যাত্রীরা বলছেন, অ্যাপে অধিকাংশ রাইডার ইদানীং গন্তব্য রাইড ক্যানসেল করে দেন। অনেক সময় কলারকে ক্যানসেল করতে বাধ্য করা হয়। গন্তব্যে যাওয়ার তাড়া থাকায় অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হয়েই ভাড়ায় বা ‘খ্যাপে’ রাইড করতে হচ্ছে। চালকরা বলছেন, প্রতি রাইডে অ্যাপের কমিশন বেশি ও জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেআইনি হলেও ভাড়ায় চালিয়ে আয় বেশি।

মোবাইল ফোন অ্যাপসভিত্তিক গাড়ি শেয়ার নেটওয়ার্ক ‘উবার’ ও ‘পাঠাও’র কার্যক্রম দেশে শুরু হয় ২০১৬ সালে। এরপর থেকে সড়কে যানজট এড়িয়ে দ্রুত ও সহজে গন্তব্যে পৌঁছাতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এ রাইড শেয়ারিং। তবে, বাড়তি ভাড়া, অ্যাপসের প্রতি অনীহা ও যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা রকম হয়রানির অভিযোগও রয়েছে চালকদের বিরুদ্ধে। অ্যাপসে না গেলে চালক ও গ্রাহক উভয়ের তথ্য অ্যাপস কোম্পানিগুলোর ট্র্যাকে থাকে না। চুক্তিতে বা খ্যাপে গেলে বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি।

‘রাইড শেয়ার করে এমন সব প্রতিষ্ঠান নিয়ে শিগগির আলোচনা হবে। যেসব অভিযোগ প্রায়ই আসে সেসব বিষয়ে কথা বলবো। বিআরটিএ’র নীতিমালা পর্যালোচনা করে যাত্রীদের জন্য যা মঙ্গলজনক ও নিরাপদ সে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।- বিআরটিএ চেয়ারম্যান গৌতম চন্দ্র পাল

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বেশি লাভের আশায় যদি অ্যাপসে না গিয়ে খ্যাপে যাত্রী বহন করে সেক্ষেত্রে চালক ও যাত্রী উভয়ের ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে রাতে ও অলিগলিতে বিপত্তি ঘটতে পারে। বর্তমানে নারীরাও রাইড শেয়ারিংয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। তাদের ঝুঁকি আরও বেশি।

‘খ্যাপে’ গিয়ে হত্যার শিকার রাইডার মিলন

অ্যাপস ছাড়া ভাড়ায় বা ‘খ্যাপে’ যাত্রী বহন করেন রাইড শেয়ারিং পাঠাওয়ের চালক মিলন (৩৫)। ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট রাত ৩টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের ওপর চালক মিলনকে অ্যান্টিকাটার দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মূল আসামিকে গ্রেফতার করে এবং উদ্ধার করা হয় নিহত মিলনের ১৫০ সিসির মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন।

পুলিশ জানায়, মামলাটি সম্পূর্ণ ক্লুলেস ছিল। মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে উঠতে আবুল হোটেলের ঢালে আসামি নুর উদ্দিন পাঠাও চালক মিলনকে গুলিস্তান যাবেন বলে ঠিক করেন। ফ্লাইওভারের ওপরে পৌঁছালে মোটরসাইকেল থামাতে বলেন নুর উদ্দিন। মোটরসাইকেল থামানোর পর তিনি মিলনকে বলেন মোটরসাইকেল চালাবেন। এতে মিলন রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নুর উদ্দিন অ্যান্টিকাটার দিয়ে মিলনের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে চলে যায়।

গন্তব্যেও যান না, রিকোয়েস্ট ক্যানসেলও করেন না রাইডার

নিয়মিত রাইড শেয়ার করেন এমন অন্তত ২০ জন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে জাগো নিউজ। যাত্রীরা জানান, রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের চালকরা এখন প্রায়ই রাইডের অনুরোধ গ্রহণ করেও পরে আর আসেন না। রাইডও ক্যানসেল করেন না। এতে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই ‘খ্যাপে’ যেতে হচ্ছে বেশি টাকা খরচ করে।

মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ার বাসিন্দা শাহজাহান আলী নিয়মিত পাঠাও ব্যবহার করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক মাস আগে আমি পাঠাও বাইক সার্ভিসে একটা রাইড রিকোয়েস্ট করেছিলাম। একজন রাইডার রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করলেন, কিন্তু রাইড কনফার্ম করার জন্য আমাকে কল করলেন না। এই কাজটা তারা প্রায়ই করেন। তাই আমিই তাকে কল দিলাম, কিন্তু দেখা গেলো তার যাওয়ার ইচ্ছা নেই। গুলশানে দ্রুত যাওয়া লাগবে এজন্য পাশে থাকা একজন রাইডারকে ডেকে বেশি ভাড়া দিয়ে খ্যাপে গিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রথমে মনে হয়েছিল এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু এখন আমার আর তা মনে হয় না। আজকাল প্রায়ই এরকম ঘটনার মুখোমুখি হই। আরেকদিন আরেক রাইডার বললেন, তিনি অ্যাপস বন্ধ করে দিচ্ছেন। রাইড ক্যানসেল করে তিনি আমাকে ওই টাকা দিয়ে খ্যাপে নিয়ে গেলেন।

নারী যাত্রীর তিক্ত অভিজ্ঞতা

সামিহা আহনাফ অর্পিতা নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন জাগো নিউজকে। তিনি বলেন, ‘আমি ধানমন্ডি থেকে বনানী আসছিলাম উবারে। চালক মহাখালী এসে সামনে জ্যাম দেখে আর যাবেন না। কিন্তু সম্ভাব্য ভাড়া যা দেখাচ্ছিল সেই ভাড়া দাবি করেন চালক। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে অশ্লীল গালিগালাজ শুরু করলে আমি গাড়ি থেকে নেমে যেতে বাধ্য হই।’

রাজধানীর গাবতলী, মিরপুর, ফার্মগেট, পল্টন, ধানমন্ডি, পান্থপথ, গুলিস্তান, শাহবাগ, বনানী, মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা, উত্তরা ও খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতি মোড়েই মোটরসাইকেল নিয়ে চালকরা যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন। বেশিরভাগই রাইডারের সঙ্গে থাকা স্মার্টফোনে পাঠাও-উবার অ্যাপস চালু করা থাকলেও দেখা যায় বিভিন্ন মোড় ও বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী খুঁজছেন তারা। যাত্রী পেলে তাদের সঙ্গে দরদাম মিললেই গন্তব্যে রওয়ানা হচ্ছেন। অনেক চালক যাত্রীর জন্য হাঁকডাক করছেন। মোটরসাইকেলের পাশ দিয়ে গেলেই যাত্রীদের অনেক রাইডার জিজ্ঞেস করেন ‘কোথায় যাবেন।’

এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে চাননি কেউ। একজন চালক জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব চালকের ব্যবহার বা আচার-আচরণ এক হবে না। মাঝে মধ্যে যাত্রীরাও গন্তব্য নিয়ে ঝামেলা করেন। বেশি যানজটের এলাকায় গেলে তেল খরচসহ সময় নষ্ট হয়। এজন্য অনেক সময় রিকোয়েস্ট ক্যানসেল করে দেই।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উবারের আরেক চালক বলেন, ‘উবার অ্যাপে কোনো চালক যাত্রীর লোকেশন দেখতে পারে না। অনেক সময় এমন হয় যে দিনের শেষ ট্রিপ নেবো নিজের বাসার কাছাকাছি। তখন যদি গন্তব্য না মেলে ক্যানসেল করে অন্য ট্রিপের জন্য অপেক্ষা করা হয়।’

বাইকারদের যত অভিযোগ

প্রতিদিন রাইডার শেয়ার করেন বাইকার মামুনুর রশিদ। কারওয়ান বাজার মোড়ে তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গাড়ি আমার, পরিশ্রম আমার, তেল আমার, মবিল আমার, রাস্তায় পুলিশের মামলা খেলে সেটা তুলতে হয় আমার, গাড়ির সার্ভিস খরচ আমার, এমনকি অ্যাপ ব্যবহারে যে ইন্টারনেট খরচ হয় সেটাও আমারই কিনতে হয়। তাহলে কেন পাঠাও-উবার কোম্পানিকে কমিশন দিতে যাবো?

তবে অ্যাপসে যাওয়ার সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, অ্যাপে সহজেই যাত্রী পাওয়া যায়। একই সঙ্গে যাত্রী-বাইকারের দুজনের জন্যই অ্যাপের অধীনে যাতায়াত নিরাপদ। অ্যাপ রাইড করলে শতকরা ১৫ শতাংশ দিতে হয় সংশ্লিষ্ট অ্যাপস কোম্পানিকে। প্রতি ৩০০ টাকা বাইক রাইডে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানিকে টাকা দিতে হয়।

চুক্তিতে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে একাধিক রাইডার এ প্রতিবেদককে বলেন, অ্যাপসের মাধ্যমে গেলে বিভিন্নভাবে টাকা কেটে নেওয়ার পর যা থাকে তাতে তেলের দাম ওঠে না। তাই বাধ্য হয়ে অ্যাপস ছেড়ে চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছেন। অনেকে আবার সময় বাঁচানোর জন্য চুক্তিতে চলাচল করেন। অ্যাপে কল দিয়ে অযথা সময় নষ্ট করতে চান না। এছাড়া যারা নিয়মিত যাত্রী তাদের বিভিন্ন ধরনের ডিসকাউন্ট দেয় রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে তেল খরচের টাকাও ওঠে না।

‘অ্যাপস ব্যবহার না করে রাইড শেয়ার করার ক্ষেত্রে পাঠাওয়ের কোনো নির্দেশনা নেই। যারা পাঠাওয়ের রাইড শেয়ার করেন সবাই ফ্রিল্যান্সার। কোনোভাবে তাদের কন্ট্রোল করতে পারে না পাঠাও। তবে তাদের গাইড করা হয়, যাতে কোনো অনিয়ম না করেন।’ - পাঠাওয়ের পাবলিক রিলেশনশিপ ম্যানেজার ফয়েজ

অয়ন আহমেদ নামে আরেক রাইডার বলেন, পার্টটাইম বাইক রাইড শেয়ার করি। অ্যাপসে গেলে ১৫ শতাংশ কমিশন কেটে নেয়। কমিশন, বাইক ওয়েল, মবিল, বাইক সার্ভিস, পরিশ্রম সব মিলিয়ে আয়ের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শেষ হয়ে যায়। এ কারণে রাইডাররা অ্যাপসের প্রতি বিমুখ হচ্ছেন।

পেট্রোলের দাম ছিল ৮৬, এখন ১৩০

অ্যাপে না চালিয়ে কেন ভাড়ায় চালান, এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঠাওয়ের এক নিবন্ধিত চালক বলেন, আগে যেখানে চাকরি করতাম, সেই চাকরিতে বেতন ছিল ১২ হাজার টাকা। ওই টাকায় সংসার চলতো না। দেখা যেত মিথ্যার আশ্রয় নিলে আবার ঠিকই ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারতাম। কিন্তু ওই পথ ভালো লাগেনি। এজন্য বাইক চালানো শুরু করি। প্রথমে উবারে চালাতাম, এরপর পাঠাওয়ে চালাতে শুরু করি। অ্যাপের সঙ্গে ভাড়ায়ও চালাই। এতে ৩০-৪০ হাজার টাকা অনায়াসেই আয় হয়।

অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে চালান আবার ভাড়ায়ও চালান- এ কাজ তো বেআইনি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অ্যাপে আগে কমিশন দিতে হতো ১০ শতাংশ, আর এখন দিতে হয় ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকায় ১৫ টাকাই দিতে হয়। এত টাকা যদি দিয়েই দিই তাহলে কীভাবে চলবে? খ্যাপের মাধ্যমে গেলে তো কাউকে কমিশন দিতে হয় না।

অ্যাপের চেয়ে ‘খ্যাপে’ খুশি রাইডাররা

আগে পেট্রোলের দাম ছিল ৮৬ টাকা, এখন ১৩০ টাকা। এ অবস্থায় কীভাবে কমিশন দিই। দাম বাড়ার পর পাঠাও বা কোনো অ্যাপে চালাতে ইচ্ছা করে না। যদি আমাদের ভাড়ার রেটটা একটু বাড়িয়ে দিতো, তাহলেও একটা কথা ছিল।

পদক্ষেপ নিচ্ছে না বিআরটিএ

২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং না করে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করলে সংশ্লিষ্ট চালক ও যাত্রীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে রাইড শেয়ারিং সেবার নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ভাড়ার বেশি নিলে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ও চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিআরটিএ।

কিন্তু মাঠে এ নির্দেশনার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। প্রতিদিনই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাইক রাইডাররা অ্যাপস ছাড়া যাত্রী বহন করছেন। কিন্তু বিআরটিএ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে করে রাইডাররা আরও বেশি উৎসাহিত হচ্ছে খ্যাপে রাইড শেয়ারে।

এ বিষয়ে বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) ও মুখপাত্র শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, দেশে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রায়ই মতবিনিময় করা হয়। আমরা তাদের এসব সমস্যার সমাধান করতে বলি। কিন্তু সমস্যা হলো এগুলো তো দেখা যায় না। কেউ সুনির্দিষ্ট বললো আমরা অবশ্যই দেখবো।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। রাইড শেয়ার করে এমন সব প্রতিষ্ঠান নিয়ে শিগগির আলোচনা করা হবে। যেসব অভিযোগ প্রায়ই আসে সেসব বিষয়ে কথা বলবো। বিআরটিএর নীতিমালা পর্যালোচনা করে যাত্রীদের জন্য যা মঙ্গলজনক ও নিরাপদ সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

যা বলছে রাইড শেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো

জানতে চাইলে পাঠাওয়ের পাবলিক রিলেশনশিপ ম্যানেজার ফয়েজ বলেন, অ্যাপস ব্যবহার না করে রাইড শেয়ার করার ক্ষেত্রে পাঠাওয়ের কোনো নির্দেশনা নেই। কারণ পাঠাওয়ে যারা রাইড শেয়ার করেন সবাই ফ্রিল্যান্সার। পাঠাও কোনোভাবে তাদের কন্ট্রোল করতে পারে না। এরপরেও আমাদের পক্ষ থেকে গাইড করা হয় যাতে তারা কোনো অনিয়ম না করে।

যা বলছে পুলিশ

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, অ্যাপস ব্যবহার না করে চুক্তিতে চলাচল করলে যাত্রী ও চালক দুজনের জন্যই নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। সেক্ষেত্রে উভয়পক্ষকেই সতর্ক হওয়া এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে চলাচল না করা উচিত। চুক্তিতে গেলে যাত্রী যেমন হয়রানি বা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন, তেমনি চালকও মোটরসাইকেল ছিনতাইসহ নানা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, রাইড শেয়ার অ্যাপস একটি সিস্টেম, কোনো আইন না। যেখানে আইনের বাস্তবতা থাকে, আইনের মধ্যে পড়ে এবং আইনের ধারা থাকে তখনই সুনির্দিষ্ট আইনে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। যেমন সিএনজিচালিত অটোরিকশার মিটার। মিটার একটা পদ্ধতি কিন্তু এটি সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নয়। রাইড শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রেও একই। রাইড শেয়ারিংয়ে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট আইন থাকতো তবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতো। তবে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য যাত্রী ও রাইডার দুজনেরই অ্যাপস ব্যবহার করা উচিত।

আরও পড়ুন

টিটি/এমএএইচ/এএসএম