ডিএমপি
শাহবাগে ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে পুলিশ, শিক্ষার্থীদের বোধোদয় হোক
কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে রাজধানীর শাহবাগে। আদালতের নির্দেশনার পর শিক্ষার্থীদের সড়কে না নামার অনুরোধ জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে সেই অনুরোধ তোয়াক্কা না করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
ডিএমপির অনুরোধ তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশ শাহবাগে ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছি তারা যেন আজ থেকে সড়কে না নামে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে। বুধবার আদালত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই আর কোটা নিয়ে আন্দোলনের কোনো অবকাশ নেই শিক্ষার্থীদের।
আমরা আশা করেছি, শিক্ষার্থীরা নতুন করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির মতো কোনো কর্মসূচি দেবেন না। কিন্তু তারা সড়কে নেমে পড়লেন, যোগ করেন মহিদ উদ্দিন।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পুলিশের অবস্থান শাহবাগে রয়েছে। পুলিশ ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে। আমরা আশা করি আজই এটা শেষ হবে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা কিছু করবে না। পুলিশ চায় না শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছু হোক। তাদেরও বোঝা উচিত। তাদেরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। আমরা আশা করবো তাদের (শিক্ষার্থীদের) বোধোদয় হবে।
- আরও পড়ুন
আজ থেকে সড়ক বন্ধ করে বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি
সড়কে দুর্ভোগ না বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন জানান, হাইকোর্টের রায়ের ওপর সর্বোচ্চ আদালত চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। ফলে আজ থেকে শিক্ষার্থীদের আর জনদুর্ভোগ করার কোনো অবকাশ আছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ মনে করে না।
তিনি বলেন, যারা আন্দোলন করছেন তাদের প্রতি পুলিশের অবশ্যই ভালোবাসা, সহমর্মিতা আছে। কিন্তু একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে দেশের প্রচলিত আইন ও সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে আমরা বাধ্য। সে জায়গা থেকে যেহেতু শিক্ষার্থীরা শিক্ষিত, ফলে ডিএমপির পক্ষ থেকে আমি বিনীত অনুরোধ করছি তারা যেন জনদুর্ভোগ হয় এমন কোনো কর্মসূচি না দেয়।
তিনি বলেন, গত ১০ দিন ধরে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাবসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের গাড়ি, চলাফেরা ব্যাহত হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়েছে মানুষ যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে। পুলিশ সবার অধিকারের বিষয়ে যেমন শ্রদ্ধাশীল সেই সঙ্গে মহানগরবাসীর নিরাপত্তায় ও গমনাগমনের জন্য পুলিশ প্রাণান্ত চেষ্টা করে।
মহিদ উদ্দিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে যে আন্দোলন চলছিল সেটি ৬ জুলাই থেকে ১০ জুলাই সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে এবং ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। আমরা আশা করি, আমাদের আবেদন এবং সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই রয়েছে। তাই পরবর্তী কর্মসূচির কোনো যৌক্তিকতা নেই। শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতা এবং ভালোবাসা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা চলমান রয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, গত ৭ জুলাই রথযাত্রা হয়েছে। সামনে আশুরা ও উল্টো রথযাত্রা রয়েছে।
আজও শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়েছে। পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা শিক্ষার্থীদের পক্ষে রয়েছে। কাজেই আন্দোলন যদি যৌক্তিকতা না থাকে তবে আন্দোলনে আসা উচিত নয়। আন্দোলন না করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
টিটি/এমআইএইচএস/জেআইএম