ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ০৯ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পিওএম) কামরুল হাসান এবং তার স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুননেছা আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, দুদক অনুসন্ধান করে পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল হাসান ও তার স্ত্রীর নামে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। গত মাসে দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ যাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হস্তান্তর করতে না পারেন, সে জন্য দুদকের পক্ষ থেকে সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করা হয় আদালতে। পরে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল হাসান ১৯৮৯ সালে উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে তিনি হাটহাজারী বাঁশখালীসহ বিভিন্ন থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছর নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার প্রসিকিউশন হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাকে বদলি করা হয়। তিনি চট্টগ্রাম আদালতের হাজতখানার আসামিদের জন্য সরকারি বরাদ্দের খাবার বিতরণ না করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিল তুলে নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুদক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল হাসান ঢাকার সাভারে ১০৭ শতক জায়গার ওপর সাভার সিটি সেন্টার নামে ১২ তলা ভবনের চারজন অংশীদারের একজন। সেখানে তিনি কাগজ-কলমে সাত কোটি ৫২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এ ভবনের বেজমেন্টে ৯০টি, প্রথম তলায় ১৪০টি, দ্বিতীয় তলায় ১৪৬টি, তৃতীয় তলায় ৮৯টি ও চতুর্থ তলায় ১০৩টি দোকান এবং ৫ হাজার বর্গফুটের ফুডকোর্ট, পঞ্চম তলায় অফিস ও ষষ্ঠ তলায় ৬৭টি ফ্ল্যাট রয়েছে। বাজার মূল্যে এ সম্পদের মূল্য শতকোটি টাকারও বেশি।

ঢাকার সাভারে মার্কেট ছাড়াও সাভার সিটি টাওয়ার নামে একটি ১০ তলা আবাসিক ভবনেরও অংশীদার। সেখানে ৫৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এভাবেই চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সম্পদ আর সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। এছাড়া কামরুল চট্টগ্রাম নগরের উত্তর হালিশহর, নাসিরাবাদ, চান্দগাঁও এলাকা এবং ঢাকার সাভারে ১৫৪ শতক জমি ও দুটি বাড়ি কিনেছেন। ব্যাংকে ১ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার বন্ড ও এফডিআর রয়েছে।

তার স্ত্রী সায়মার নামে রয়েছে পাঁচটি জাহাজ। চট্টগ্রামের হালিশহরে ৪০ শতক জমি রয়েছে। মাত্র ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ক্রয় দেখানো হলেও বর্তমান বাজারে সেই জমির মূল্য ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকে তার নামে ৪৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও দেড় কোটি টাকায় কেনা পাঁচটি জাহাজ রয়েছে।

একইভাবে চট্টগ্রাম নগরের সবচেয়ে অভিজাত খুলশী আবাসিক এলাকায় ‘ফয়জুন ভিস্তা’ অ্যাপার্টমেন্টের অষ্টম তলায় সি-৭ নামে ২ হাজার ৫৭০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১৩৬ বর্গফুটের পাড়ি পার্কিং থাকার তথ্য পেয়েছে দুদক।।

সোয়া সাত লাখ টাকায় ফ্ল্যাট ও মাত্র ২৫ হাজার টাকায় পার্কিং স্পেস কিনেছেন-আয়কর নথিতে এমন দাবি করলেও খুলশীতে আড়াই হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারমূল্য তিন কোটি টাকার বেশি। পাশাপাশি নগরের পশ্চিম নাসিরাবাদ মৌজায় সাত শতক ভূমির ওপর চার তলাবিশিষ্ট বাড়ি রয়েছে।

জমিসহ ভবন নির্মাণে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা খরচ দেখালেও নাসিরাবাদ এলাকায় এক শতক ভূমিই এক কোটি টাকার বেশি মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে। সেই হিসাবে ভূমি ও ভবনের বাজার মূল্য সাত-আট কোটি টাকা। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ব্যবসা কিংবা সম্পত্তিগুলো ক্রয়ের সময় কোনো অনুমতি নেননি তিনি।

এএজেড/এসএনআর/জিকেএস