পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের রিজার্ভে চীনের সহযোগিতার বিষয়ে ‘আলোচনা নেই’
রিজার্ভে চীনের সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘অফিসিয়াল কোনো আলোচনা বা প্রস্তাব নেই’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, তবে চীনের বিনিয়োগকারীরা কিংবা অন্য যেকোনো বিদেশি ব্যাংক বা রাষ্ট্র চাইলে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখতে পারে। অনেক দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকেই এভাবে টাকা রাখা হয়।
রিজার্ভ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমাদের রিজার্ভ এখন ভালো হচ্ছে। রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ক্রমশ এটি বাড়তে থাকবে।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে দুদেশের মধ্যে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে, কোনো পয়েন্টটিকে গেম চেঞ্জার মনে করছে সরকার- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সঙ্গে এমওইউ হবে, কোনো চুক্তি হবে না। চায়না আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশে কিছু চায়নিজ বিনিয়োগ আছে। চায়না গত কয়েক দশকে আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। এখানে তাদের বিনিয়োগ যেমন আছে, তেমনই তাদের অনেকে এখানে অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছেন। সুতরাং, এ সফরে আমাদের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
চীন বাংলাদেশের রিজার্ভে সহায়তা দিতে চাইলে সেই অর্থের পরিমাণ কেমন হতে পারে- জানতে চইলে তিনি বলেন, প্রথমত সেরকম ঋণ চুক্তি তো তালিকায় নেই। অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য আমাদের এমওইউ হবে। সেই এমওইউয়ের আলোকে আমাদের চাহিদার ভিত্তিতে ও প্রয়োজনের নিরিখে ব্যাংকিং বা অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতা হবে।
গত ৪ জুলাই ঢাকায় ‘ডিক্যাব টকে’ চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের রিজার্ভে সহযোগিতার বিষয়ে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এমন প্রস্তাব পেলে বাংলাদেশ সাড়া দেবে কি না- জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নানা দেশ নানা প্রস্তাব দেয়। সব প্রস্তাব আমরা গ্রহণও করি না। আমরা আমাদের প্রয়োজনের নিরিখে সহযোগিতা নিই।
‘বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর আবার পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন করতে চেয়েছিল, আমরা নিইনি। আরও অনেক ক্ষেত্রে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা সহযোগিতা করতে চাইলেও আমরা নিইনি। চীনের পক্ষ থেকে যেকোনো প্রস্তাব আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। তবে সেটি পরবর্তীকালে অবশ্যই আমরা ভেরিফাই করে ব্যবস্থা নেবো। আমাদের এই চীন সফরের এমওইউতে এটি (রিজার্ভে সহযোগিতা) নেই। এটি আলোচনা হতে পারে। তবে এ ধরনের অফিসিয়াল প্রস্তাব আমরা দিয়েছি বলে জানা নেই’- এ প্রসঙ্গে যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন
- এক অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১২.৭৯ বিলিয়ন ডলার
- রিজার্ভ কমে যাওয়া শঙ্কার কারণ হতে পারে: ড. ওয়াহিদউদ্দিন
অফশোর ব্যাংকিং বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অফশোর ব্যাংকিং সবার জন্য উন্মুক্ত। চীনের বিনিয়োগকারীরাও চাইলে সেখানে টাকা রাখতে পারেন, যে কেউ রাখতে পারেন। যেকোনো দেশ যদি চায় আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখতে সেটিও রাখতে পারে। তবে আমরা কাদের সঙ্গে কমফোরটেবল সেটিই মূল বিষয়।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো বিদেশি ব্যাংক বা রাষ্ট্র আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখতে পারে। যেমন- আমেরিকার সেন্ট্রাল ব্যাংকে অনেকে টাকা রাখেন। এছাড়াও অনেক দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকে অনেকে টাকা রাখেন। আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকেও সেভাবে টাকা রাখতে পারেন, সে বিষয়গুলো আলোচনা হতে পারে।
আইএইচআর/এমকেআর/জেআইএম