ব্যারিস্টার সুমন
সরকারের মধ্যে ‘রাসেল ভাইপার’ ঢুকে গেছে, ধরার মতো বেজি নেই
হবিগঞ্জ-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক (ব্যারিস্টার সুমন) বলেছেন, ‘রাসেলস ভাইপার’ সাপ সরকারের মধ্যে ঢুকে গেছে। প্রকৃতিতে যখন সাপ আসে তখন বেজিও থাকে। এ বেজি সাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারে বিভিন্ন জায়গায় রাসেলস ভাইপার আছে, কিন্তু সেই সাপকে ধরার মতো বেজি নেই। তাই সাপ বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, রাসেলস ভাইপারের কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা দুর্বল হয়ে গেছে! একজন ‘ভদ্রলোক’কে দুদক ধরতে পারেনি, এনবিআর ধরতে পারেনি, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ধরতে পারেনি, সেখানে এনবিআরের মতিউর রহমানকে ধরলো একটা ছাগল। ছাগলকাণ্ড না ঘটলে আর ফেসবুক ভাইরাল না হলে এ লোকের বিষয় তো সামনেই আসতো না।
সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
সৈয়দ সায়েদুল হক বলেন, অর্থপাচার এ সরকারের বড় সমস্যা। কিছুতেই এটা ঠেকানো যাচ্ছে না। দুর্নীতি করলে তো সেই টাকা অর্থনীতিতে ফিরিয়ে আনা যায়। পাচার হয়ে গেলে যেই দেশে যায় সেই দেশের অর্থনীতির বাজেট হয়ে যায়। আমরা তো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আনতে পারিনি, আর পাচার করা টাকা ফেরত আনবো কীভাবে? অর্থপাচারের কারণে আমাদের বাজেট সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বেনজীর কাণ্ড! সাবেক আইজিপি! উনি এত বড় হয়ে গেলেন, মন্ত্রণালয় জানলো না, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানলেন না! আর কিছুদিন সময় পেলে পুরো গোপালগঞ্জ কিনে ফেলতেন এ বেনজীর সাহেব। এটার দায় মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না। এখন কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, যদি এমন হয় কিছু জমানো টাকা রয়ে গেছে যেটাকে সাদা করবেন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু, এ সুযোগ ব্যবহার করে বেনজীর আর মতিউরের টাকাও যদি সাদা হয়ে যায়, আর এদের আদর্শের উত্তরাধিকারদের টাকাও যদি সাদা হয়ে যায়, এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু থাকবে না।
এ সরকারকে কয়েকটা চাপ নিতে হবে। এ বাজেটে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন ব্যয় মেটানো হবে। আড়াই লাখ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। এমপি হওয়ার পর আমি কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছি। ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছি। এতেই রাতে ঘুম হয় না। আড়াই লাখ কোটি টাকা ঋণের চাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে ঘুমাবেন, তা উনিই জানেন। তবে আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিনি, বঙ্গবন্ধুকন্যা এমন এক পাখি যিনি বসেন ডালের ওপর, কিন্তু ভরসা রাখেন নিজের পাখার ওপর। এ কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক সরে গেলেও পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন।
‘শ্রীলঙ্কা যখন দেউলিয়া হয়, তখন সবাই বলেছিলেন বাংলাদেশের দেউলিয়া হওয়া সময়ের ব্যাপার। পাকিস্তান যখন দেউলিয়ার পথে, তখনও একই কথা বলেছিল সবাই। ভারত অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়লেও একই কথা সামনে এসেছে। কিন্তু, আমাদের অর্থনৈতিকভাবে দাবিয়ে রাখা যায়নি। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার সম্পদ আমাদের চেয়ে কম ছিল না, শুধু তাদের হাতে ছিল না একজন শেখ হাসিনা। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া। সরকার যেমন সংসদে বাজেট দিচ্ছে, এ সরকারকে ব্যর্থ করতে আরও একটা বাজেট আছে। সেই বাজেটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সঙ্গে আছে ডলার।’
আইএইচআর/এমএএইচ/