পশু কোরবানি
গরুর গুঁতায় ভেঙেছে হাড়, ছুরি ফসকে কেটেছে হাত-পা
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে আজ। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করছেন। সোমবার (১৭ জুন) সকাল থেকে মহল্লায় মহল্লায় পশু কোরবানি করছেন মুসলমানরা।
কোরবানি করতে গিয়ে গরুর লাথি ও গুঁতা খেয়ে হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে আহত হয়েছেন অনেকে। অনেকের হাত-পায়ের রগ কেটে গেছে। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন এসেছেন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (নিটোর) চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে এসব চিত্র। ডেমরার মুক্তার হোসেন, সকাল ৯টার সময় জবাইকারী ব্যক্তি গরুর গলায় পোচ দিতে গিয়ে তার হাতের ওপর ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন। এতে তার ডান হাতের রগ কেটে গেছে। দ্রুত অপারেশন করাতে হবে। কিন্তু কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
মুক্তার হোসেন বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল থেকে বলা হয়েছে সেখানে রগের কাজ করা হচ্ছে না। রগের সেলাই দেওয়া হচ্ছে না। পঙ্গু হাসপাতাল থেকে বলেছে- সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় লাগবে। এখন কোথায় যাবো কী করবো?’
আরও পড়ুন
মৌসুমি কসাই মোয়াজ্জেম হোসেন এসেছেন মুন্সিগঞ্জ থেকে। গরু কোরবানি করতে গিয়ে লাথি খেয়ে তার ডান পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। জরুরি বিভাগে কাতরাচ্ছেন তিনি।
মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘গরুর লাথিতে ডান পা ভেঙে একদম পায়ের হাড্ডি বের হয়ে গেছে।’
মিরপুর-১ নম্বর থেকে এসেছেন সেলিম মিয়া। গরুর গুঁতা খেয়ে পাঁজরের হাড় ভেঙেছে তার। জরুরি বিভাগে হুইল ট্রলিতে কাতরাচ্ছেন এই বয়ষ্ক মানুষ।
সেলিম মিয়ার স্ত্রী বলেন, ‘গরু জবাই দেওয়ার সময় লাফ দিয়েছে। গরুর পায়ের লাথি খেয়ে ছিটকে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙেছে'।’
সিএনজি অটোরিকশাচালক তামিম। বাড়তি লাভের আশায় গরুর চামড়া ছিলতে গিয়ে হাতে পোচ লেগেছে তার। ডান হাতের কবজি কেটে হাসপাতালে তিনি।
আরও পড়ুন
এর পাশেই কাতরাচ্ছেন বাবুল মিয়া। তিনি মুগদা থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘কসাই গরু জবাই করতে গিয়ে বাম পায়ে পোচ মারছে।’
কোরবানির গরু জবাই করার সময় ছুরির আঘাতে হাতের রগ কেটে গেছে রাজধানীর আজিমপুরের যুবক মনোয়ারের। তার ডান হাতের ৪০ শতাংশ কেটে দুই ভাগ হয়ে গেছে।
দয়াগঞ্জ এলাকার ফয়সাল আলম গরুর লাথি খেয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এতে তার চোখের নিচটা মারাত্মকভাবে ফুলে উঠেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
নিটোরের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বলেন, সকাল থেকে ২০০ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ গরুর শিঙের আঘাত পেয়েছেন, আবার কেউ বা ছুরি চালাতে গিয়ে আঙুল কেটে ফেলেছেন। এ রকমই বেশি। কেউ আবার গরুর গুঁতা খেয়ে হাত-পা ভেঙেছেন।
এদিকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি দিতে গিয়ে গরুর গুতা, লাথি ও মাংস কাটার সময় ছুরিকাঘাতে আহত ৯৪ জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এমওএস/বিএ/জিকেএস