রিমালে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর
ঘূর্ণিঝড় রিমালের সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
বুধবার (১৩ জুন) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।
সার্বিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে গতকালকে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছি ঘূর্ণিঝড়ের সব ক্ষতিকে একত্রিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেব। আমি আজকের মধ্যে সারাদেশের সমস্ত মন্ত্রণালয়ের যে ক্ষতিটা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ রেডি করে আগামীকাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেব।
তিনি বলেন, ‘এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বেড়িবাঁধের। উপকূলীয় মৎস্য সম্পদেরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। কোটি কোটি টাকার মাছের ঘেরগুলো নষ্ট হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে অসংখ্য বেড়িবাঁধ নষ্ট হয়েছে, রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে, বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে।’
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রায় ৯০ ভাগ হিসাব পেয়ে গেছি। আজকে বাকিটা পেয়ে যাবো। ক্ষয়ক্ষতির হিসাবটা আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিব, যাতে তিনি এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন। যাতে সব কাজগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিকভাবে করতে পারেন।’
৯০ শতাংশ ক্ষতি টাকার অংকে কত- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকাল পর্যন্ত আমি দেখলাম যে আমার কাছে ৭ হাজার কোটি টাকার হিসাব একটা আমার কাছে এসেছে।
ঢাকায় সর্বাচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্পও হতে পারে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তবে ভয়ের কারণ নেই। কারণ এমন পরিস্থিতি বহুদেশে আছে। যেমন, তুরস্কে ভূমিকম্প হয়। কিন্তু তারা দুর্যোগ সহনীয় অবকাঠামো ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। যে কারণে সমস্যা এলে তা সমাধান করার সক্ষমতা তারা তৈরি করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো রকম ভূমিকম্প হয়, সেজন্য শহুরে অঞ্চলে ব্যাপকভাবে স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করতে কাজ করছি। ভবনগুলো যদি ধসে যায়, তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করা ও মানুষকে উদ্ধারে আমরা ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
তিনি জানান, ভবিষ্যতে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ রেখে যেতে চাইলে পুরো জাতিকে দুর্যোগের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বিশেষ করে আমার ভয়ের কারণ ভূমিকম্প। বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। যে কোনো ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এতে ঢাকা শহরের লাখ লাখ লোক আটকা পড়তে পারেন।
৮ মাত্রার ভূমিকম্পের যে তথ্য দিয়েছেন, সেটা কীসের ভিত্তিতে বলেছেন- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা বৈজ্ঞানিকভাবেই পরীক্ষিত।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বজ্রপাত নিয়ে আমরা কাজ করছি। বজ্রপাত নিয়ে প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা বিভাগে রয়েছে। এ প্রকল্প পাস হলে বজ্রপাতের সমস্যা আমরা একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে পারব।
বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
আরএমএম/জেএইচ/এমএস