ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সম্পত্তি জব্দ-অবরুদ্ধের আদেশ

কী করবে বেনজীর পরিবার, যা বলছে আইন

জাহাঙ্গীর আলম | প্রকাশিত: ০৬:০৪ পিএম, ২৮ মে ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মির্জা, মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর ও জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের স্থাবর সম্পত্তি জব্দ (ক্রোক) ও অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারিক আদালত। এসব সম্পত্তি ফেরত পেতে হলে আদালতের দারস্থ হতে হবে বেনজীরের পরিবারকে। আইন অনুযায়ী সম্পত্তি ফেরত পেতে অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ প্রচারের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে পারবেন তারা। তবে সম্পত্তি ফেরত পেতে আবেদন করবেন কি না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বেনজীর পরিবারের এক আইনজীবী।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ও রোববার (২৬ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বেনজীর পরিবারের ১৯৮ একর জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন। যার দলিলমূল্য ২০ কোটি ৭১ লাখ ৯ হাজার টাকা। এছাড়া বেনজীরের পরিবারের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং পরিবারের মালিকানার কোম্পানিও জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সবমিলিয়ে অ্যাকাউন্ট এবং কোম্পানি বাদেও দুই দিনে বেনজীরের পরিবারের প্রায় ২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার তিনটি ও জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এই চারটি ফ্ল্যাট ঢাকার গুলশানে অবস্থিত র‌্যানকন আইকন টাওয়ারে। চারটি ফ্ল্যাটের দলিলমূল্য ধরা হয়েছে দুই কোটি ১৯ লাখ টাকা। এসব ফ্ল্যাটের তিনটি রয়েছে স্ত্রী জীশান মির্জার নামে। স্ত্রীর নামে ভবনটির ১৩ ও ১৪ তলায় থাকা তিনটি ফ্ল্যাটের দলিলমূল্য এক কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া মেয়ে জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের নামে ভবনটির ১৪ তলায় ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দলিলমূল্যের একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে জব্দের আদেশের তালিকায়।

আরও পড়ুন

আদালত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন, বিধিমালা-২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক (অ্যাটাচ) এবং অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার নির্দেশ দেন।

বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ১৮ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারার বিধান মোতাবেক সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামীয় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ করার আবেদন করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।

দুদকের পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর নিবেদন করেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে, স্ত্রী জিশান মির্জা ও মেয়েদের নামে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। অভিযুক্তরা বাংলাদেশে তাদের নামে-বেনামে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়/হস্তান্তর করে বিদেশে পাচারের চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান/মামলা নিষ্পত্তির পূর্বে সম্পত্তিসমূহ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে।

পিপি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ (সংশোধিত-২০১৯) এর বিধি ১৮ এর বিধানমতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামীয় অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করণ এবং অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ করার আবেদন করেন।

বিচারক আদেশে বলেন, তফসিলে বর্ণিত স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ করার জন্য অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার দাখিল করা দরখাস্ত এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি পর্যালোচনা করা হলো। বর্ণিত স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ করা না হলে তা হস্তান্তর হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। পিপির বক্তব্য, দরখাস্তে বর্ণিত আবেদন ও অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় দরখাস্তটি মঞ্জুরযোগ্য মর্মে প্রতীয়মান হয়।

জব্দ ও অবরুদ্ধকৃত সম্পত্তি ফেরত পেতে করণীয়

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ১৪ ধারার অধীন আদালত কোন সম্পত্তি অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ প্রদান করলে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বা সত্তা ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি বা সত্তার উক্ত সম্পত্তিতে কোন স্বার্থ থাকিলে তিনি বা উক্ত সত্তা উহা ফেরত পাবার জন্য অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ প্রচারের তারিখ হতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে পারিবেন।

আদালত শুনানির সুযোগ প্রদান করবেন

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৫ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, ১৪ এর উপ-ধারা (৫) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারার অধীন সম্পত্তি ফেরত পাবার জন্য আদালত কোন আবেদনপ্রাপ্ত হলে আবেদনকারী, তদন্তকারী সংস্থা ও অভিযুক্ত ব্যক্তি বা সত্তাকে শুনানির সুযোগ প্রদান করবেন এবং শুনানি অন্তে, প্রয়োজনীয় কাগজাদি পর্যালোচনাক্রমে ও রাষ্ট্র কর্তৃক বর্ণিত সম্পত্তিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানিলন্ডারিং বা সম্পৃক্ত অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততার গ্রহণযোগ্য সন্দেহের কোন কারণ উপস্থাপন না করিলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনকারীর আবেদন সম্পর্কে আদালত সন্তুষ্ট হলে অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ বাতিলক্রমে সম্পত্তিটি, আদেশে উল্লিখিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, আবেদনকারীর অনুকূলে হস্তান্তরের আদেশ প্রদান করবেন।

সম্পত্তির অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশের বিরুদ্ধে আপিল

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৬ (১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন আদালত কোন সম্পত্তির অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ প্রদান করলে উক্তরূপ আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সত্তা ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন আপিল দায়ের করা হইলে আপিল আদালত পক্ষবৃন্দকে, শুনানির জন্য যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়া, শুনানি অন্তে যেইরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ আদেশ প্রদান করতে পারবেন।

(৩) ধারা ১৪ এর অধীন কোন সম্পত্তির বিষয়ে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশের বিরুদ্ধে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সত্তা আপিল করলে এবং আপিল আদালত কর্তৃক ভিন্নরূপ কোন আদেশ প্রদান করা না হলে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্তরূপ অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ কার্যকর থাকিবে।

অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ লংঘনের দণ্ড

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোক আদেশ লংঘন করলে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অবরুদ্ধকৃত বা ক্রোক আদেশকৃত সম্পত্তির মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ক্রোকের আদেশ দেওয়া স্থাবর সম্পত্তি

আদালতের আদেশ সূত্রে জানা যায়, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের জব্দকৃত স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট। এছাড়া সাভারের মৈস্তাপাড়া মৌজার ৩ কাঠা জমিও জব্দের আদেশের আওতায় রয়েছে।

জব্দের আদেশ দেওয়া সম্পত্তির মধ্যে বিশাল পরিমাণ রয়েছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ডুমুরিয়া মৌজায়। এখানে বেনজীরপত্নী জীশান মির্জার নামে থাকা ১১৩টি দলিলমূলে অর্জিত ৮৯.২৩ একর জমির দলিল জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব জমির দলিলমূল্য ১০ কোটি ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়াও মাদারীপুরের শিবচরে ঠেঙ্গামারা মৌজায় থাকা ৮.২৫ শতক জমি রয়েছে এ তালিকায়।

অবরুদ্ধ করা অস্থাবর সম্পত্তি

অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া বেনজীরের অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখায় থাকা ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, শান্তা সিকিউরিটিজ লিমিটেডে স্ত্রী জীশান মীর্জা ও মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে থাকা দুটি বিও অ্যাকাউন্ট, লঙ্কা সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বেনজীর আহমেদের নামে থাকা দুটি বিও আইডি। এছাড়া অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া অস্থাবর সম্পত্তির আওতায় রয়েছে তার মালিকানাধীন চারটি কোম্পানির শতভাগ শেয়ার। সেগুলো হলো- সাভানা ন্যাচারাল পার্ক প্রাইভেট লিমিটেড, সাভানা অ্যাগ্রো লিমিটেড, সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও একটি শিশির বিন্দু লিমিটেড।

এছাড়া বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে থাকা আংশিক শেয়ারসমূহ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে তাদের আংশিক শেয়ারের খোঁজ মিলেছে সেগুলো হলো- নর্থ চিকস্ রংপুর লিমিটেড, নর্দার্ন বিজনেস অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড, সেন্ট পিটার স্কুল অব লন্ডন লিমিটেড, স্টিলথ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বাংলা টি ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ডেল্টা আর্টিসানস লিমিটেড, ইস্ট ভ্যালি ডেইরি লিমিটেড, গ্রিন মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, কমিউনিটি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, সেন্টার ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন, পুলিশ ট্রাস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্টস লিমিটেড, পুলিশ ট্রাস্ট সার্ভিস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড, পুলিশ ট্রাস্ট কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড এবং এমএস সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভস।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিসতা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ ও ৮৩ দলিলের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। যার দলিলমূল্য ১০ কোটি ৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।

বেনজীরের নামে সম্পত্তি রয়েছে গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজারে। তার নামে মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮ একর ১ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। যার বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

দুদকের আইনজীবী খোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, বেনজীর আহমেদের ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার গোপালগঞ্জের সম্পত্তির ৬৯টি দলিলের সম্পত্তি ক্রোকের জন্য দুদক আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সম্পত্তিগুলো ক্রোকের নির্দেশ দেন।

সম্পতির আরও বিবরণ

বেনজীরের স্ত্রী জিশান মির্জার নিজস্ব নামে সম্পত্তি রয়েছে ৭ একর ১৬ শতাংশ। যার বাজারমূল্য ৮৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের জমির পরিমাণ ১৩ একর ৯১ দশমিক ৪৭ শতাংশ, যার বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভের ম্যানেজিং পার্টনার হিসেবে সম্পত্তি আছে ৮ একর ২৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। মোট বাজারমূল্য ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টসের পক্ষে চেয়ারম্যান হিসেবে তার স্ত্রী জিশান মির্জার সম্পত্তি আছে ২৮ একর ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাজারমূল্য ৩ কোটি ১৬ লাখ ১২ হাজার টাকা।

সাউদার্ন পার্ক রিসোর্ট অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের পক্ষে চেয়ারম্যান জিশান মির্জা ও স্বামী বেনজীর আহমেদ। সম্পত্তির পরিমাণ ১১ একর ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। দলিলমূল্য ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

সাভানা এগ্রো লিমিটেডের পক্ষে চেয়ারম্যান জিশান মীর্জা, স্বামী বেনজীর আহমেদ; জমির পরিমাণ ১৬ একর ৬৫ শতাংশ। মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা।

সাভানা ন্যাচারাল পার্ক প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষে চেয়ারম্যান জিশান মীর্জা, স্বামী বেনজীর আহমেদ। জমির পরিমাণ ৪ একর ৫ শতাংশ। দলিলমূল্য ৩০ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

তিন সন্তান

ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর ও জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের যৌথ নামে সম্পত্তি রয়েছে ৩৫ শতাংশ। যার বাজারমূল্য ৩০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

তিন কন্যা ও দুই নাতি

রুহ মিজান স্নেহা, পিতা: মিজানুর রহমান। মাশরুর নুতক মিজান নাফিজ, পিতা: মিজানুর রহমান। তাদের নামে সম্পত্তি আছে ২৬ দশমিক ২০ শতাংশ।

উল্লেখ, গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়— সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ গত ৩৪ বছর ৭ মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদ বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।

এরপর গত ২২ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। দুদক চেয়ারম্যান, সচিবসহ চার জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান এই রিট দায়ের করেন।

জেএ/এমএমএআর/এমএস