ডুবেছে চট্টগ্রাম: ভোগান্তিতে অফিসগামী মানুষ
‘সকাল ৮টায় ঘর থেকে বের হয়েছি। এখনো রাস্তাতেই আটকে আছি। পুরো রাস্তাজুড়ে পানি, গাড়িও নেই। কিন্তু অফিসে যেতেই হবে, দুর্যোগে নিরাপদে থাকবেন সে উপায় নেই।’
সোমবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট মোড়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন।
শুধু ফরহাদ হোসেন নন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় হাজার হাজার মানুষ এই মুহূর্তে চট্টগ্রামের সড়কে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাতভর বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। সড়ক-অলিগলি, বাসাবাড়ি হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে ডুবে গেছে। ডুবে গেছে নগরের চকবাজার, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, বাদুড়তলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, আগ্রাবাদ, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, কালারপোল, বড়পোল, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকা। এসব এলাকায় বেশিরভাগ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানিতে। বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
বেসরকারি অফিস, শিল্প ও কারখানা খোলা থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবীরা। বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশাচালকরা। উন্মুক্ত নালা ও ফুটপাতের ভাঙা স্ল্যাব পথচারীদের জন্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে অনেকটা।
নগরের রাহাত্তারপুল এলাকার মাদরাসা শিক্ষক জানে আলম মুরাদপুরে থাকেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টি দেখে তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বের হয়েছি। কিন্তু বের হতে গিয়ে দেখি রাতেই ভবনের নিচতলায় পানি প্রবেশ করেছে। হাঁটুপানি মাড়িয়ে রাস্তায় এলেও এখন গাড়ি পাচ্ছি না। কিন্তু মাদারাসায় তো যেতে হবে, তাই হেঁটে বহদ্দারহাট এসেছি। এখন দেখি এখানেও একই অবস্থা।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে নগরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। কীভাবে অফিসে যাবো বুঝতে পারছি না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এসব সমস্যা আমলে নেয় না।
সকাল ৯টার দিকে চকবাজারের বাদুরতলা এলাকায় কথা হয় পোশাকশ্রমিক তানিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি অক্সিজেন এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
তিনি বলেন, সকাল ৮টায় কারখানায় পৌঁছাতে হয়। কিন্তু আজ পানির কারণে গাড়ি আসেনি। তাই হেঁটেই রওয়ানা হয়েছি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২০৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এ কারণে পাহাড়ধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
এএজেড/এমএইচআর/জিকেএস