ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যা বললেন জেনারেল আজিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১১ পিএম, ২১ মে ২০২৪

অনিয়ম-দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। সোমবার (২০ মে) দিনগত রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তবে আজিজ আহমেদ দাবি করেছেন, শাস্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ তিনি করেননি। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে তা অসত্য এবং সঠিক নয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণভাবে তার জন্য প্রযোজ্য নয় বলেও মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, শাস্তি পাওয়ার মতো কোনো অপরাধ করিনি। আমি মনে করি এটি (মার্কিন নিষেধাজ্ঞা) সম্পূর্ণভাবে আমার জন্য প্রযোজ্য নয়।

সেনাপ্রধান হিসেবে এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ভাই বা আত্মীয়দের কন্ট্রাক্ট দিয়েছেন- কেউ সেটা প্রমাণ করতে পারলে যে কোনো কনসিকোয়েন্স বা পরিণতি মেনে নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ।

আরও পড়ুন

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে আলাপকালে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আমি অবাক হয়েছি। আমি এখানে দেখতে পাচ্ছি, অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন অনুষ্ঠানে যে অভিযোগ দুটি আনা হয়েছিল, সেটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। যদিও এখানে এত কিছু বিস্তারিত বলা হয়নি, কিন্তু একই জিনিস।’

তিনি বলেন, প্রথম অভিযোগ হলো, আমি আমার ভাইকে বাংলাদেশের প্রচলিত যে আইন আছে, তার অপরাধ কর্মকাণ্ড থেকে সে যেন এড়িয়ে চলতে পারে সেজন্য আমি আমার পদ-পদবি ব্যবহার করে তাকে সহযোগিতা করে দুর্নীতি করেছি। দ্বিতীয়ত হলো, আমি সেনাপ্রধান হিসেবে আমার ভাইকে সামরিক কন্ট্রাক্ট দিয়ে ঘুস নিয়েছি; আমি আরেকটি দুর্নীতি করেছি।

তিনি বলেন, প্রথম অভিযোগের বিষয়ে বলবো, আমার সেই ভাই, যদিও এখানে নাম উল্লেখ করা হয়নি, আমি জেনারেল হওয়ার অনেক আগে থেকে বিদেশে এবং নিশ্চয়ই সে বৈধ পাসপোর্ট নিয়েই বিদেশে গিয়েছে। সেখানে দেশ থেকে চলে যাওয়ার বা দেশের প্রচলিত আইন ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি আমার পদ-পদবি ব্যবহার করেছি এই অভিযোগ আমি মেনে নিচ্ছি না। মেনে নিতে পারি না, এটি সঠিক না।

দ্বিতীয় অভিযোগের ক্ষেত্রে বলবো, আমি চার বছর বিজিবি প্রধান এবং তিন বছর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কেউ যদি একটা প্রমাণ দিতে পারে আমি আমার ভাই বা আত্মীয়কে বিজিবি বা সেনাবাহিনীতে কোনো কন্ট্রাক্ট দিয়েছি, আমি যে কোনো কনসিকোয়েন্স মেনে নিতে প্রস্তুত আছি। আমি আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন বা ভাইকে কোনো কন্ট্রাক্ট দেইনি।

আরও পড়ুন

গণমাধ্যমকর্মীদের খোঁজ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমার ভাইদের কারও বিজিবি বা সেনাবাহিনীতে ঠিকাদারি করার জন্য কন্ট্রাক্ট নেওয়ার কোনো ধরনের লাইসেন্স আছে কি না খোঁজ নিলেই পেয়ে যাবেন।

আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আজিজ আহমেদ কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবেন কি না- জানতে চাইলে সাবেক এ সেনাপ্রধান বলেন, আমার জানানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন কি না জানতে চাইলে বলেন, আমি দুটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। আমার মনে হয়, আর কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কিছু নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে সাবেক জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন।

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, আজিজ আহমেদ তার ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটি করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন।

এছাড়া অন্যায্যভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করতে তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তিনি নিজের স্বার্থের জন্য সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে ঘুস নিয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনরায় নিশ্চিত করা হলো।

টিটি/এমকেআর/এএসএম