সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র বহুমুখী করেছে: প্রধানমন্ত্রী
সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র বহুমুখী করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ আইনের সমালোচনারে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা প্রশ্ন উঠান, বিশেষ আইন কেন করলাম। বিশেষ আইন এ জন্য করেছি, আমিতো ব্যক্তিখাতে সব উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ব্যক্তিখাতে উন্মুক্ত করে দিতে হলে আইন করেই করতে হবে। দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা শুধু সরকার দিয়ে হবে না, ব্যক্তিখাত দিয়েই করতে হবে।
ব্যক্তিখাতে না দিলে কর্মসংস্থানও বাড়ে না। পৃথিবীর কোন দেশ আছে? যেখানে ক্যাপাসিটি চার্জ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর হয়? একটা দেশ দেখান। এখন ক্যাপাসিটি চার্জ বলে চিৎকার। বিশেষ আইনে কাউকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়নি। বরং বেসরকারিখাতে প্রথম বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছিল সামিট, খুলনায় তারা এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে দেরি করেছিল, যে কয়দিন দেরি করেছিল প্রতিদিন ১০ হাজার ডলার করে জরিমানা দিতে হয়েছিল। সেই জরিমানা আমি আদায় করেছিলাম। ছাড় আমি দেই না সেটা মাথায় রাখতে হবে। তাই এখানে দায়মুক্তির কিছুই নেই। বিদ্যুৎ উৎপাদন যাতে বন্ধ না হয় এ জন্য বিশেষ আইনটি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন করতে হলে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ দেওয়া। বিদ্যুৎ দিতে পারলে কর্মসংস্থান এমনিই তৈরি হয়।
সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র বহুমুখী করেছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আমরা সোলার প্যানেল শুরু করেছি। বায়ুভিত্তিকবিদ্যুৎকেন্দ্র শুরু করেছি। কয়লাভিত্তিক করছি। তেলভিত্তিক-গ্যাসভিত্তিক সবই করছি। মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে চাই। প্রচণ্ড গরমে লোডশেডিং হয়েছে। আমরা সেটা স্বীকার করি। কিন্তু কৃষক যেন সেচটা পায়- সেখানে কিন্তু ভর্তুকি দেওয়া হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী অভিজাত এলাকায় লোডশেডিং দেওয়ার কথা বলেন। এ বিষয়টি তিনি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
সরকারের উন্নয়ন কাজের সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মায় রেল লাইনের নাকি প্রয়োজনই নেই। এ রেললাইন ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে মংলা পোর্ট পর্যন্ত পৌছাবে। সেইভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটা প্রয়োজন নেই যারা বলেন, তাদেরকে কী বলবো? অর্বাচীন ছাড়া। এত টাকা খরচ করে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন করলাম? এটা কী প্রয়োজন ছিলো! নিউক্লিয়ার পাওয়ার হচ্ছে সব থেকে ক্লাইমেট ফ্রেন্ডলি। কোনো দূষণ নেই। সেই ৬২ সাল থেকে এটা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরা আমাদের ধোকা দিয়েছিল। দুটি পাওয়ার প্লান্ট করবে বলে দুটোই নিয়ে গেলো পাকিস্তানে (পশ্চিম পাকিস্তানে)। আজকে আমরা পারমাণবিক পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ করেছি। এখান থেকে সব থেকে ভালো বিদ্যুৎ আমরা পাবো। আমরা সেখানে আরও একটা করবো। এরই মধ্যে আমি কথা বলেছি। ওখানেই আরেকটা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, কেউ কেউ বলে বাংলাদেশে রাস্তা বানাতে এত খরচ কেন? এদের দেশের মাটি সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই। মাটির সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্কই নেই। আমাদের মাটি এটা একটা ব-দ্বীপ। এ মাটি দো’শলা। যাকে বলে জোবা মাটি। এ মাটি নরম। এখানে কোনো কিছু করতে গেলে ওই যেনতেন করতে গেলে দু-চারদিনের বেশি থাকে না। সেখানে আমরা মাটি তুলে আধুনিক প্রযুক্তিতে রাস্তা তৈরি করছি। যেখানে শক্তমাটি সেখানে অত খরচ হয় না। নরম মাটি বলেই খরচ বেশি। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই।
বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্যান্য সরকারের উন্নয়ন চিত্রের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১৫ বছরে যে পরিমাণ কাজ করতে পেরেছি। ওই ২১ বছর আর ৮ বছর। এই ২৯ বছরে কেউ করতে পেরেছে? পারেনি। পারবেও না। প্রকল্প দিয়েই তো আগে টাকা খাওয়া। আর আমরা প্রজেক্ট শেষ করে ছাড়ি। টাকা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্বব্যাংক চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল। আমরা তা মোকবিলা করেছি। প্রমাণ করতে পেরেছে? হ্যা কিছু জিনিস আপনারা তৈরি করে গেছেন। ওই জিয়াউর রহমানের আমল থেকে কালচার একটা তৈরি করে গেছে। এদের কিছু আছে। সেখান থেকে কীভাবে উত্তোরণ ঘটানো যায় সেই চেষ্টাও আমাদের আছে। আমাদের চেষ্টাই হচ্ছে দেশের উন্নতি করা। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি।
সমালোচকদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কাজগুলো আমরা করছি, যার সুফল জনগণ পাচ্ছে সেটাকে স্বীকার করেন। প্রত্যোকটি কাজ যদি প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে হয় তাহলে কী করা যাবে। তবে জনগণ থেকে আমাকে দূরে সরাতে পারবেন না। আমার একটা শক্তি হচ্ছে জনগণ। তাদের শক্তি নিয়ে আমি চলি।
আইএইচআর/এমএসএম
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ জামুকা-মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠন
- ২ শাহজালালে লাউঞ্জ চালু করায় প্রশংসা করলেন বিমান উপদেষ্টা
- ৩ সংবিধান সংশোধনের একমাত্র অধিকার পার্লামেন্টের: হাসান আরিফ
- ৪ পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ
- ৫ ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসীদের পাসপোর্ট পৌঁছানো হবে: আইন উপদেষ্টা