ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

যুবকদের আইসিটিতে দক্ষ করার উদ্যোগ, ফ্রিল্যান্সিংয়ে গুরুত্ব

মফিজুল সাদিক | প্রকাশিত: ০৮:১৩ এএম, ০৪ মে ২০২৪

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী, দেশে ১৫-২৯ বছর বয়সী জনসংখ্যা পৌনে পাঁচ কোটি। আর মোট বেকার প্রায় ২৫ লাখ। বেকার ও কর্মক্ষম যুব সম্প্রদায়কে দক্ষ করে তুলতে আইসিটি প্রশিক্ষণ দেবে সরকার। ফ্রিল্যান্সিংয়ে থাকবে বিশেষ গুরুত্ব। প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ৭১ হাজার যুবককে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে কাজ করছে সরকারের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।

‘৬৪টি জেলায় তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা। তবে এই ব্যয় কিছুটা কমতে পারে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৪ জেলার সব অফিসে প্রযুক্তি উপকরণ সরবরাহ করা হবে। এতে জোর দেওয়া হবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীন সারাদেশে ৭৯টি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালিত পাঁচটি প্রশিক্ষণ কোর্সের সক্ষমতা বাড়াতে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। বাস্তবায়ন করা হবে জুন ২০২৬ মেয়াদে। আট বিভাগের ৬৪টি জেলায় অবস্থিত ৭৯টি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বাস্তবায়িত হবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় হওয়ায় প্রকল্পের ক্ষেত্রে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি বাধ্যতামূলক নয়। তাই ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করা হয়নি। তবে পর্যায়ভুক্ত প্রকল্প হিসেবে প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়িত প্রকল্পটির আইএমইডি থেকে সমাপ্ত মূল্যায়ন করা হয়েছে। সমাপ্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ জাতীয় প্রকল্প বাংলাদেশকে উন্নত দেশে উত্তরণ ত্বরান্বিতকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৭১ হাজার ৫৮০ জনকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। প্রশিক্ষণ দেবেন সরকারের নির্ধারিত প্রশিক্ষকরা। বিশেষ করে এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের সুযোগ থাকবে বেশি।- যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) এম এ আখের

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) এম এ আখের জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পটি মূলত দেশের সব যুব অফিসে নতুন করে প্রযুক্তি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে। এর আগের প্রকল্পে অর্থাৎ প্রথম পর্যায়ে কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। এবার আরও কিছু কেনা হবে। কম্পিউটার যন্ত্রপাতি যেগুলো আছে সেগুলো অনেক পুরোনো। নতুন যন্ত্রপাতি পেলে প্রশিক্ষণের জন্য সহায়ক হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৭১ হাজার ৫৮০ জনকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। প্রশিক্ষণ দেবেন সরকারের নির্ধারিত প্রশিক্ষকরা। বিশেষ করে এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের সুযোগ থাকবে বেশি।’

তিনি জানান, বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, নেটওয়ার্কিং ও ইন্টারনেট, ওয়েবপেজ ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড হাউজওয়্যারিং, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, হার্ডওয়্যার অ্যান্ড ট্রাবলস্যুটিং, ফ্রিল্যান্সিং অ্যান্ড আউটসোর্সিংসহ কম্পিউটার বিষয়ে দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতাধীন ৬৪টি জেলায় অবস্থিত ৭৯টি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কম্পিউটার বেসিক অ্যান্ড আইসিটি অ্যাপ্লিকেশন কোর্স, প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স, ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড হাউজওয়্যারিং, ইলেকট্রনিক্স ও রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ট্রেডে ছয়মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়। কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উক্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে।

কোর্সগুলো যথাযথভাবে পরিচালনায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ের একটি প্রকল্প ৬০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ থেকে ২০১৯ মেয়াদে বাস্তবায়িত হয়। এ খাতে কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ থাকায় নতুন করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মূল জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ সেন্টার ও কম্পিউটার উপকরণ সরবরাহ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বিদ্যমান ২৭৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আধুনিক প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও উপকরণ সরবরাহের মাধ্যমে মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ, দেশ-বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনবল তৈরি, চাকরির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি, যুবকদের উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে দেশে দারিদ্র্য হ্রাস করা এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

এর আগে ‘৬৪টি জেলায় তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য খুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় ৬৪টি জেলায় কম্পিউটার বেসিক অ্যান্ড আইসিটি অ্যাপ্লিকেশন কোর্স, প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড হাউজ ওয়্যারিং, ইলেকট্রনিক্স এবং রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ট্রেডে ছয়মাস মেয়াদি কোর্সে প্রশিক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার ৮৫০ জনের। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ৪০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

নতুন প্রকল্পটির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও যুগোপযোগী হবে। চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক আধুনিক প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি ও খুচরা যন্ত্রাংশ কিনে সরবরাহ করা হবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ আরও আধুনিক হবে।

এমওএস/এএসএ/এমএস