ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে শ্রমিকের ইউনিয়ন করার অধিকার

ইব্রাহীম হুসাইন অভি | প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ০১ মে ২০২৪

গত কয়েক বছরে দেশে অনেক নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। উন্নয়ন হয়েছে দেশের অর্থনীতির। সম্পদ বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে স্বীকৃতি নেই শ্রমিকের কাজের। অনেক সেক্টরে নেই যথাযথ মজুরি কাঠামো। বেড়েছে চুক্তিভিত্তিক কাজ। নেই কাজের আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্র।

দেশের শিল্প ও অর্থনীতি উন্নত হলেও কমেছে শ্রমিকের ইউনিয়ন করার অধিকার। মে দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার একথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের ইব্রাহীম হুসাইন অভি।

 

সম্প্রতি অধিকারহীনতার বড় উদাহরণ পরিলক্ষিত হয়েছে ন্যায্য বেতন আদায়ে শ্রমিকরা যখন রাস্তায় নামেন এবং তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে।

 

নাজমা অক্তার দাবি করেন, অধিকাংশ কারখানার শ্রমিকদের যে ইউনিয়ন রয়েছে তা মালিকদের দ্বারাই গঠিত। এ ধরনের শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করে শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলা সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন, শ্রমিকের সংখ্যা বিবেচনায় খুব অল্পসংখ্যক শ্রমিক গণতান্ত্রিক ধারায় ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারছে। এই অল্পসংখ্যক ইউনিয়ন দ্বারা শ্রমিকের অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শ্রমিকরা তুলে ধরতে পারছে না তাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষার কণ্ঠ।

আরও পড়ুন

‘সরকার একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ট্রেড ইউনিয়ন করতে দেওয়া হয় না। এই নতুন অঞ্চলগুলোতে শিল্প-কারখানাগুলো নতুন নতুন বিনিয়োগ করছে। অনেক শ্রমিকের এখানে কর্মসংস্থান হলেও তারা তাদের অধিকারের বিষয়ে কথা বলতে পারছেন না। এতে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে অধিকার আদায়ের দাবি।’ বলেন এ শ্রমিক নেত্রী।

নাজমা অভিযোগ করেন, যদিও সরকার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার অনেক আইন অনুস্বাক্ষর করেছে কিন্তু শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ ধরনের আইনের বিষয়গুলো যথাযথ পরিপালন হচ্ছে না।

‘সম্প্রতি শ্রমিকের মজুরি বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু এই মজুরি বাড়ানোর ক্ষেত্রে মালিকের সক্ষমতার কথা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকের জীবিকা ও জীবনমানের বিষয়টি সেখানে অনুপস্থিত। শ্রমিক যে আয় করছে তা দিয়ে যথাযথভাবে তার ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে পারছে না।’

 

শ্রমিকরা শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শ্রমিকের অধিকার আদায় বাধাগ্রস্ত করে বা তাদের বঞ্চিত করে দেশ ও অর্থনীতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।

 

নাজমা বলেন, সম্প্রতি অধিকারহীনতার বড় উদাহরণ পরিলক্ষিত হয়েছে ন্যায্য বেতন আদায়ে শ্রমিকরা যখন রাস্তায় নামেন এবং তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে।

সরকার যদি শ্রমিকের যথাযথ দাবি ও ন্যায্য মজুরি দিতে চায় তাহলে বর্তমান যে আইনগুলো রয়েছে তার সংশোধন একান্ত জরুরি মনে করেন এই শ্রমিক নেত্রী। তিনি বলেন, শুধু সংশোধনী নয়, শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় শ্রমিকরা ক্রমশ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

নাজমা বলেন, শ্রমিকরা শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শ্রমিকের অধিকার আদায় বাধাগ্রস্ত করে বা তাদের বঞ্চিত করে দেশ ও অর্থনীতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। যদি আমরা দেশকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে পরিণত করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার দিতে হবে এবং আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

এএসএ/জিকেএস