বিদ্যুৎ-গ্যাস-সারের দাম বাড়ানোর চাপ মানলে মানুষ আরও বিপদে পড়বে
খাদ্যনিরাপত্তার কথা বলে আইএমএফ বিদ্যুৎ-গ্যাস এবং সারের দাম বাড়ানোর চাপ দিচ্ছে, তা মানলে সাধারণ মানুষ আরও বিপদে পড়বে বলে মনে করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, ‘জ্বালানি ও সারের দাম বাড়ানো মানে মানুষকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত।’
ফের জ্বালানি ও সারের দাম বাড়ানোর যে আলোচনা সামনে এসেছে তা নিয়ে জাগো নিউজের কাছে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘সরকার ভর্তুকির যে ব্যাখ্যা দিয়ে জ্বালানি ও সারের দাম বাড়াচ্ছে, তা মূলত বিভ্রান্তিকর। এটি আসলে ভর্তুকির মধ্যে পড়ে না। এটি অ্যালোকেশন (বরাদ্দ)। জনগণের সেবার জন্য করা হয়। জনগণের সেবার জন্য দেওয়া বরাদ্দ কখনই ভর্তুকি নয়। দ্বিতীয়ত, এই টাকা জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স নিয়ে জনগণের জন্যই বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে আইএমএফের পরামর্শ নিয়ে। আইএমএফের পরামর্শ আমাদের মতো দেশের জন্য কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখে না। এর আগের অবস্থান দেখে যে কেউ এ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। আইএমএফ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাপ সৃষ্টি করে তাদের স্বার্থে। তারা জনগণের কল্যাণে কোনো চাপ দেয় না।’
- আরও পড়ুন
বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই: শামসুল আলম
ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ-গ্যাস-সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ আইএমএফ’র
তিনি বলেন, ‘যে কথা বলে আইএমএফ বিদ্যুৎ-গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানোর চাপ দিচ্ছে, তা মানলে সাধারণ মানুষ আরও বিপদে পড়বে। জ্বালানি ও সারের দাম বাড়ানো মানুষকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত। সরকার তো রেশন ব্যবস্থা চালু করেনি। আগে সবার জন্য রেশন ব্যবস্থা চালু করুক, তারপরে আইএমএফের পরামর্শ মতে দাম বাড়ানো হোক।
সরকার করবে না বা করতে পারবে না বলেই তো আইএমএফের পরামর্শ শোনে। সবারই জেগে ওঠার সময় এখন। এভাবে চললে কেউ রেহাই পাবো না। দায়টা নিজ নিজ জায়গা থেকে উপলব্ধি করা দরকার।
খাদ্যনিরাপত্তার কথা বলে যদি দাম বাড়ানোর কথা বলে তাহলে পুলিশ, সেনাবাহিনীকে যেভাবে রেশন দেওয়া হয়, সেভাবেই সাধারণ মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করা হোক। আপনি জ্বালানির দাম বাড়িয়ে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। তার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। সুবিধা নিচ্ছে আরেক শ্রেণি।’
‘আসলে এই সরকার তো জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে রাজি নয়। কারণ তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে না। জোর করে ক্ষমতায় এসে বিদেশিদের পরামর্শ মানতে বাধ্য হয়। কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। প্রবাসী শ্রমিকরা টাকা পাঠায়। সরকার ঘনিষ্ঠরা লুটপাট করে তা বাইরে পাচার করে। গার্মেন্ট শ্রমিকরা শোষিত। সবই তো লুটপাটের অংশ। আমি মনে করি, সরকারের কাছে কালো টাকার যে হিসাব আছে তা বাজেয়াপ্ত করে দশ ভাগের এক ভাগ খরচ করলেই আইএমএফের পরামর্শ শোনার দরকার হবে না।’ বলছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
সরকার তা করতে পারবে কি না? বলেন, ‘সরকার করবে না বা করতে পারবে না বলেই তো আইএমএফের পরামর্শ শোনে। সবারই জেগে ওঠার সময় এখন। এভাবে চললে কেউ রেহাই পাবো না। দায়টা নিজ নিজ জায়গা থেকে উপলব্ধি করা দরকার। কায়েমি স্বার্থের বাইরে বিকল্প বামশক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে। যেখানে সব মানুষ যুক্ত থেকে নিজেদের অধিকার বণ্টন করবে।’
এএসএস/এএসএ/জিকেএস