ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আ’লীগ নেতার হুঁশিয়ারি

মিটিং তো দূরের কথা, অন্য কোনো প্রার্থী গণসংযোগও করতে পারবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৭:১৪ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২৪

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য এক প্রার্থীর পক্ষে সভা করার সময় অন্য প্রার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। মো. ইসমাইল হোসেন খোকন নামের এ নেতা বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজার গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইসমাইল হোসেন খোকন সম্ভাব্য অন্য প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এখানে অন্য কোনো প্রার্থী গণসংযোগও করতে আসতে পারবে না, মিটিং তো দূরের কথা। আমরা সবাই যদি ঠিক থাকি, এখানে অন্য কোন প্রার্থী ঢোকার (প্রবেশের) সৎসাহস করতে পারবে না। যদি কোনো না কোনোভাবে উঠান বৈঠক বা সমাবেশ করতে স্থান তাদের না দেই।’

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে বোয়ালখালীর শ্রীপুরে চেয়ারম্যান পদের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজার গ্রামের বাড়িতে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে এমন হুমকি দেন তিনি।

বক্তব্যে ইসমাইল হোসেন খোকন বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্দেশনা থাকলেও আমরা ব্যক্তি বিশেষ তিন-চারজন মিলে গ্রুপ-উপগ্রুপ এগুলো মেইনটেইন করে চলি। আমরা কেউ কারও বিপক্ষে নই। এখানে জমির ভাইয়ের অধীনে আছে, চেয়ারম্যানের আন্ডারে আছে, নুরুল হুদার ভাইয়ের আন্ডারে আছে, আমার আন্ডারেও আছে। আমারটা আমি বলছি না, আমারটাতো এখানে মিটিংয়ে আছেই। এখানে আমদের প্রত্যেকের নির্দেশনা যদি থাকে, এখানে অন্য কোনও প্রার্থী, এখানে গণসংযোগও করতে আসতে পারবে না, মিটিংতো দূরের কথা। আমার জমির ভাই, নুরুল হুদা ভাই, মোকারম ভাই নেবেন। এখানে আওয়ামী লীগ পরিবারের সবাই আছে। আমরা সবাই যদি ঠিক থাকি, এখানে অন্য কোনো প্রার্থী ঢোকার (প্রবেশের) সৎসাহস করতে পারবে না। যদি কোনো না কোনোভাবে উঠোন বৈঠক বা সমাবেশ করতে স্থান তাদের না দেই।’

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রতন চৌধুরী, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম, আওয়ামী লীগ নেতা জমির উদ্দিন, নুরুল হুদাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

মিটিংতো দূরের কথা, অন্য কোনো প্রার্থী গণসংযোগও করতে পারবে না

জানা গেছে, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ উপলক্ষে সভা আয়োজন করা হয়।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সভায় অংশ নেওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা জমির উদ্দিন বলেন, ‘ইসমাইল হোসেন খোকন ক্রোধের বসে কথাটি বলেছেন। তবে নির্বাচনী সভায় আমাদের কিছু কথা ঊর্ধ্বে রেখে বলতে হবে। কেউ থানায় রাজনীতি করি, জেলায় ও উপজেলায় রাজনীতি করি বলে সবার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ততা আছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নিদের্শনা থাকলেও।’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম বলেন, ‘প্রার্থীরা এলাকাবাসীর কাছে আসবেন এতে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন খোকন বক্তব্যে মূলত বলতে চেয়েছেন আমাদের প্রার্থীর কর্মীরা যাতে অন্যপ্রার্থীর পক্ষে কাজ না করেন। বিষয়টি ভাষাগত ত্রুটির কারণে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’

তবে ওই সভায় দেওয়া বক্তব্য অস্বীকার করেন ইসমাইল হোসেন খোকন। জানতে চাইলে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেইনি। নির্বাচন আসলে মানুষ কত কিছু বলে। আর একজন প্রার্থী আমার বাড়িতে আসলে আমি তাকে তাড়িয়ে দিতে পারবো নাকি? কিছু না পারলে তো এককাপ চা অন্তত খাওয়াবো।’

যদিও ওই সভায় দেওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর ও প্রতীক বরাদ্দের আগে শুধুমাত্র প্রার্থী পরিচিত হতে পারবেন। কোনো প্রকার নির্বাচনী সভা-সমাবেশ আইনসিদ্ধ নয়। শনিবারের ওই সভার বিষয়ে আমরা জানি না। এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের প্রচার-প্রচারণায় কেউ বাধা দিতে পারবে না। বাধা দেওয়ার কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

আগামী ২৯ মে বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপের এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ মে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে।

ইকবাল হোসেন/কেএসআর/জিকেএস